যদি বুঝতে পারেন যে আপনার স্ট্রোক হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে কী করণীয়
এখনকার জীবনযাপনে যে রোগগুলির সম্ভাবনা সবচেয়ে বেড়ে গিয়েছে, তার মধ্যে স্ট্রোক অন্যতম। আকস্মিক মৃত্যুর পিছনেও স্ট্রোকের অবদান অনেকটাই। তবে স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, অনেক ক্ষেত্রেই কোনও রকম উপসর্গ টের পাওয়া যায় না। অনেক সময়েই স্ট্রোক হলে পক্ষাঘাত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
স্বল্পস্থায়ী লক্ষণ:
স্ট্রোকের উপসর্গ গুলি:
১। হঠাৎ করে বিভ্রান্ত লাগতে পারে
২। কোনও কারণ ছাড়াই শরীরের কোনও অংশ দুর্বল হয়ে পড়তে পারে
৩। হাঁটতে অসুবিধা হওয়া
অনেক সময়ই স্ট্রোক হলেও বোঝা যায় না। কিন্তু এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া যেতে পারে। কেউ যদি এই সময়ে একা থাকেন, তা হলে কাউকে ডেকে দ্রুত সাহায্য চাওয়া উচিত। কিছু কথা মাথায় রাখতে হবে এই সময়ে। কী তা জেনে নিন—
১। যদি কোনও উপসর্গ চোখে পড়ে তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত। মস্তিষ্কের কোনও অংশে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্যেই স্ট্রোক হয়। তাই কোনও উপসর্গ দেখা দিলে, তা নিজে থেকেই সেরে যাবে ভেবে কখনও অপেক্ষা করবেন না।
২। যদি মনে হয় কারও স্ট্রোক হচ্ছে, তা হলে দেখুন
-কোনও বাক্য শুনে তা বলতে পারছেন কি না, -দু’হাত ঠিক করে তুলতে পারছেন কি না।
৪। কখন কোন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে এবং সেগুলি কতটা বাড়ছে, তা ভাল করে খেয়াল রাখতে হবে। চিকিৎসার সময়ে সব তথ্য সঠিক ভাবে দেওয়া এ ক্ষেত্রে আবশ্যিক। ডায়াবেটিস, স্লিপ অ্যাপনিয়া বা হাইপারটেনশনের মতো কোনও রকম রোগ থাকলে তা-ও বলে দিতে হবে।
৫। রক্তচাপ, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা এবং পাল্স রেট খেয়াল রাখুন। মুখের কোনও অঙ্গ বেঁকে যাচ্ছে কি না খেয়াল রাখতে হবে। নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ এবং ধরন খেয়াল রাখতে হবে।
৬। স্ট্রোক হওয়ার সময়ে কিছু খেলে বা পান করলে শ্বাস আটকে সমস্যা হতে পারে। এমনকি, মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই এই সময়ে কোনও রকম খাওয়া-দাওয়া করা যাবে না।
৭। এই সময়ে মাথা ঠান্ডা রেখে, যা যা করণীয়, তাই করে যেতে হবে। দুশ্চিন্তা করলে অনেক বেশি ভুল হয়ে যেতে পারে।
৮। অল্পবয়সীদের স্ট্রোক:
স্ট্রোক, যা রক্ত প্রবাহকে বাধা দেয় বা মস্তিষ্কে রক্তপাত ঘটায়, তা যে কোনও বয়সে হতে পারে। এটি একটি ভুল ধারনা যে শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের স্ট্রোক হয়। এমনকি নবজাতক, শিশু এবং খুব ছোট বাচ্চারাও স্ট্রোকের শিকার হতে পারে।
এটি সত্য যে বয়সের সাথে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে, কিন্তু অল্পবয়সী ব্যক্তিদের এটি হয়।
স্ট্রোক জার্নালে 2020 সালের প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী প্রকৃতপক্ষে, 10 থেকে 15 শতাংশের স্ট্রোক হয় 18 থেকে 50 বছর বয়সী লোকেদের মধ্যে।
বেশিরভাগ লোক যারা স্ট্রোকের শিকার হয় তাদের বয়স 60 বছরের বেশি। মোট স্ট্রোকের 10 শতাংশ 45 বছরের কম বয়সীদের মধ্যে ঘটে। শিশু, উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র এবং অল্প বয়স্কদের স্ট্রোক অপ্রত্যাশিতভাবে বাড়ছে। তাই নিশ্চিত হন যে আপনি স্ট্রোকের লক্ষণগুলি চিনতে বা বুঝতে পারেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারেন ৷ কেননা অনেকেই স্ট্রোকের লক্ষণগুলো জানেন না বলে, সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেন।
কেন তরুণদের স্ট্রোক হয়?
স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ সহ অল্পবয়সী এবং বৃদ্ধ উভয়ের মধ্যেই স্ট্রোকের সাধারণ কারণ । আবার এমন বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে, জীবনধারার অভ্যাস যা অল্প বয়স্কদের মধ্যে ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
কিশোর বয়সে স্ট্রোকের লক্ষণগুলির মধ্যে গুরুতর মাথাব্যথা, হঠাৎ দৃষ্টিশক্তি পরিবর্তন, দুর্বলতা, বিভ্রান্তি বা কথা জড়ানো থাকতে পারে।
স্ট্রোক কি? কি করে প্রতিরোধ করবেন
মন্তব্যসমূহ