খাবার স্যালাইন এবং ওরাল রিহাউড্রেশন থেরাপি

খাবার স্যালাইন সম্পর্কিত প্রশ্নগুলো

খাবার স্যালাইন

একটি সহজ দ্রবনের অসীম শক্তি



তীব্র জলীয় ডায়রিয়ার কারণে প্রায় ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ মৃত্যু খাবার স্যালাইন রিহাইড্রেশন দ্বারা প্রতিরোধ করা যেতে পারে, যেখানে জিঙ্ক ডায়রিয়ায় মৃত্যুহার ১১.৫ শতাংশ হ্রাস করে বলে অনুমান করা হয়।


জিংক বা দস্তা একটি অত্যাবশ্যক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যা ডায়রিয়ার সময় শরীর হতে নিষ্কাশন হয়ে যায়।


ডায়রিয়া এখন বড় সমস্যা নয়, ”তিনি ঘূর্ণায়মান সিলিং ফ্যানের নীচে তার আসন থেকে বলেছিলেন। " বাংলাদেশের সবাই O.R.S জানে।"


ওরাল রিহাইড্রেশন থেরাপি

ওরাল রিহাইড্রেশন থেরাপি (ORT) হল ডিহাইড্রেশনের একটি চিকিৎসা যাতে পানি, চিনি এবং লবণের দ্রবণ পান করা হয়।


এটি ডায়রিয়া বা তীব্র গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস দ্বারা সৃষ্ট হালকা থেকে মাঝারি ডিহাইড্রেশনের চিকিত্সার জন্য যত্নের আদর্শ মান, যা পেট ফ্লু নামেও পরিচিত।


ওআরটি হল ইন্ট্রাভেনাস বা শিরায় স্যালাইন থেরাপির একটি কার্যকরী বিকল্প এবং এটি শিশু, বয়স্ক ব্যক্তিদের এবং যাদের চিকিৎসা অবস্থা রয়েছে তাদের দেওয়া যেতে পারে। ওআরটি সম্পর্কে জানার জন্য এখানে কিছু জিনিস রয়েছে:

  • এটা কিভাবে কাজ করে: ORT ডায়রিয়া এবং বমির মাধ্যমে হারানো তরল প্রতিস্থাপন করে এবং ইলেক্ট্রোলাইট স্তরকে স্বাভাবিক করে। দ্রবণটি সাধারণত পাঁচ মিনিটের মধ্যে রক্ত প্রবাহে যেতে শুরু করে।
  • কি পান করতে হবে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) গ্লুকোজ, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, সাইট্রেট এবং ক্লোরাইডের নির্দিষ্ট ঘনত্ব সহ একটি ORS সুপারিশ করে। আপনি ORS, R-saline, Pedialyte, Enfalyte বা Rehydralyte এর মত বাণিজ্যিকভাবে উপলব্ধ ORS সমাধান কিনতে পারেন। আপনি নিজের ওআরএসও তৈরি করতে পারেন, তবে ঘনত্ব ঠিক রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
  • কিভাবে দিতে হবে: অল্প, ঘন ঘন ওআরটি দিন। শিশুদের জন্য, আপনি প্রথম ডোজ পরিমাপ করতে একটি চামচ বা ড্রপার ব্যবহার করতে পারেন।
  • কখন থামতে হবে: আপনার সন্তান ভালো বোধ করা শুরু করার পর ওআরএস দেওয়া চালিয়ে যান, কিন্তু কম ঘন ঘন।
  • কার ওআরটি এড়ানো উচিত: কিডনি ব্যাধি, ডায়াবেটিস, হার্ট ফেইলিউর, বা যারা হৃদরোগ বা রক্তচাপের ওষুধ সেবন করছেন তাদের সতর্কতার সাথে ওআরটি ব্যবহার করা উচিত। ORT আপনার জন্য নিরাপদ কিনা তা একজন ডাক্তার নির্ধারণ করতে পারেন।



খাবার স্যালাইন ওরাল রিহাইড্রেশন থেরাপি (ORT) এর অংশ। ORT হল এক ধরনের তরল প্রতিস্থাপন যা ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ ও চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে ডায়রিয়ার কারণে।


এতে পরিমিত পরিমাণে চিনি এবং লবণ, বিশেষত সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম সহ পানীয় জল থাকে।


ডায়রিয়া হলে নিয়মিতভাবে জিঙ্ক সাপ্লিমেন্টের ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। মৌখিক রিহাইড্রেশন থেরাপির ব্যবহার ডায়রিয়া থেকে মৃত্যুর ঝুঁকি ৯৩% পর্যন্ত হ্রাস করতে পারে।


এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় রয়েছে। বিশ্বব্যাপী, ২০১৫ সালের হিসাবে, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের ৪১% দ্বারা ওরাল রিহাইড্রেশন থেরাপি ব্যবহার করা হয়।


এই ব্যবহার পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।



ORS ছোট অন্ত্রে শোষিত হয় এবং মলের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া জল এবং ইলেক্ট্রোলাইট প্রতিস্থাপন করে।

জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট: জিঙ্ক সাপ্লিমেন্টগুলি ডায়রিয়ার সময়কাল ২৫% কমিয়ে দেয় এবং মল ভলিউম ৩০% হ্রাসের সাথে যুক্ত।


জরুরী বিভাগে আসা শিশুদের হালকা থেকে মাঝারি ডিহাইড্রেশনের জন্য ORT দিয়ে সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা করা হয়।


যারা ডিহাইড্রেটেড নয় এবং যারা হালকা থেকে মাঝারি ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ ও উপসর্গ দেখায় তাদের জন্য উপযুক্ত।


যাদের মারাত্মক ডিহাইড্রেশন রয়েছে তাদের অবিলম্বে পেশাদার চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া উচিত এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিরায় রিহাইড্রেশন গ্রহণ করা উচিত যাতে দ্রুত শরীরে তরল পূরণ হয়।


খাবার স্যালাইন নিয়ে প্রশ্নত্তরগুলো

প্রতিদিন ওআরএস নেওয়া কি ঠিক?



আলগা ডায়রিয়া এবং বমির মতো উপসর্গ থাকলে আপনি প্রতিদিন ওআরএস নিতে পারেন অথবা তরমুজ, কিউই, কমলালেবু, শসা, টমেটো ইত্যাদির মতো উচ্চ জলযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে পারেন। প্রতিদিন প্রচুর পানি পান করুন।


ইফতারে স্যালাইন খাওয়া কি উচিত? আর অধিক মাত্রায় স্যালাইন খেলে কী সমস্যা হয়? এই জাতীয় প্রশ্ন অনেক রুগী করেন। আসলে স্যালাইন একটি ঔষধ জাতীয় পণ্য। স্যালাইনের গায়ে এর ব্যবহার লেখা আছে।


আমি বলি, অনুগ্রহ করে ডায়রিয়া বা বমি ব্যতীত শখ করে স্যালাইন খাবেন না। স্যালাইন একটি ঔষধ জাতীয় পণ্য। স্যালাইনের গায়ে এর ব্যবহার বিধি লেখা আছে।


প্রথমেই অনুগ্রহ করি ডায়রিয়া বা বমি ব্যতীত শখ করে স্যালাইন খাবেন না।


সঠিক নিয়মে খাবার স্যালাইন বা সঠিক নিয়মে বা পদ্ধতিতে খাবার স্যালাইন না বানালে তা মারাত্মক ফল বয়ে আনে।


রোগীদের সাধারণ ধারণা আছে যে, খাবার স্যালাইন যত বেশি ঘন হবে তত বেশি ডায়রিয়ায় ভালো কাজ করবে।


এইটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। তারা নিজেরাই নিজেদের সমস্যা ডেকে আনেন। কেউ কেউ আছে গরমে ক্লান্ত হয়ে এসে খাবার স্যালাইন খান, কিন্তু তা সঠিক নই। প্রিয় পাঠক, আপনি যদি এমনটা মনে করে থাকেন তবে এখনই সাবধান হয়ে যান এবং সঠিক নিয়মে খাবার স্যালাইন বা saline বানানোর নিয়ম ভালো ভাবে শিখে নিন।


স্যালাইন বানানোর সঠিক নিয়ম কি:



খাবার স্যালাইন বানাতে হবে প্যাকেটের গায়ের লেখা নিয়ম দেখে। অর্ধেক লিটার পানিতে এক প্যাকেট খাবার স্যালাইন মেশাতে হবে।


মনে রাখবেন, কখনোই গরম পানিতে খাবার স্যালাইন বানাবেন না।


পানি ভালো করে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে তারপর খাবার স্যালাইন মেশাবেন। তা না হলে জীবন রক্ষাকারী খাবার স্যালাইন হয়ে যেতে পারে মৃত্যুর প্রধান কারণ।


খাবার স্যালাইন বানানোর ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত ভালোই থাকে, তারপরে খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ১২ ঘণ্টা পরে খাবার স্যালাইন বা saline খাওয়ার প্রয়োজন হলে একই পদ্ধতি অনুসরণ করে বানিয়ে নিতে হবে।


ভুল পদ্ধতিতে স্যালাইন বানানো ভয়ঙ্কর কেন ?

খাবার স্যালাইন-এর সেরা বিকল্প কী?



যদি ORS উপলব্ধ না হয়, তাহলে আপনাকে জল, ডাল, ঝোল এবং/অথবা অন্যান্য তরল সরবরাহ করতে হবে।


আপনার উচ্চ চিনিযুক্ত পানীয় প্রদান করা উচিত নয়, যেমন জুস, কোমল পানীয় বা স্পোর্টস ড্রিংকস, কারণ এগুলো ডায়রিয়াকে আরও খারাপ করতে পারে। ঘন ঘন ওআরএস অফার করুন, সঠিক পরিমাণ পরিমাপ করুন এবং ডায়রিয়া ও বমি হিসাবে হারানো তরল পরিমাপ করুন।


খাবার স্যালাইনের উপাদান যেভাবে থাকে যেন তা আমাদের শরীরের ঘনত্বের সাথে একেবারেই মিশে যায়। একে isotonic দ্রবণ বলে। এর ফলে শরীরের পানিশূন্যতা বা লবণশূন্যতা পূরণ হয়ে যায়। তবে কেউ যদি নিয়ম অনুসরণ না করে বেশি ঘন করে খাবার স্যালাইন বানান, তবে তা hypertonic হয়ে যাবে।


খাবার স্যালাইনের ঘনত্ব শরীরের ভিতর তরলের ঘনত্বের চেয়ে অনেক অনেক বেশি হয়ে যাবে।


ঘন খাবার স্যালাইন বা saline খাওয়ার ফলে কোষের ভেতরে যে পানি আছে তা সমান করার জন্য কোষের বাইরে চলে যাবে। এতে করে শরীর আরও পানি হারাতেই থাকবে ও ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভবনা বেশি দেখা দিবে।


সাগরের পানি খেয়ে যেমন তৃষ্ণা আরও বেড়ে যায়, কারণ সাগরের পানি hypertonic। তাই খাবার স্যালাইন পানিশূন্যতা পূরণের চেয়ে তা আরও বাড়িয়ে দেবে যার ফলে একজনের মৃত্যু হইতে পারে।


খাবার স্যালাইন বা saline পরিমাণের চেয়ে বেশি পানিতে তৈরি করা হয় তাহলে আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতি হয়ে উঠবে। কেননা এই দ্রবণ হয়ে যাবেhypotonic,যার ঘনত্ব শরীরের তরলের চেয়ে কম। এতে সমতার জন্য লবণ বাইরে রেখে বেশি বেশি পানি বা water কোষের মধ্যে চলে যাবে। এইসব সমতায় কোষ ফুলে উঠে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।


উচ্চ রক্তচাপ এবং খাবার স্যালাইন

উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের লবণাক্ত পানি দেওয়া হয় না কেন?



উচ্চ রক্তচাপের রোগীকে লবণাক্ত জল দেওয়া হয় না কারণ এটি রক্তচাপ বৃদ্ধির কারণ হতে পারে যা রোগীর জন্য মারাত্মক হতে পারে। তবে ডায়রিয়া বা বমি বেশি হলে দৈনিক ৫০০ ml পর্যন্ত দেয়া যায়।


ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দ্রুততম সময়ে সমাধান না করা হলে, এটি মারাত্মক হতে পারে। শিশুদের জন্য এটি মারাত্মক হলেও বড়দের জন্যও বিপদজনক।


ডায়রিয়া, বমি বা হিট স্ট্রোকের কারণে ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়লে এমন কাউকে এটি অবশ্যই দেওয়া উচিত, উচ্চ রক্তচাপ থাকলেও। সেক্ষেত্রে চিকিতসকের পরামর্শ নিন।


পানিশূন্যতার লক্ষণসমূহ কী :

ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ গুলো জেনে রাখুন ও হাইপার্টেনশনের রুগীর মাঝে এসব লক্ষণ দেখা দিলে তাকে অবশ্যই খাবার স্যালাইন দিন।


  • তৃষ্ণা আঠালো মুখ।
  • খুব একটা হয় না, এমন গাঢ় হলুদ প্রস্রাব।
  • শুষ্ক, শীতল ত্বক
  • মাথাব্যথা।
  • পেশী ব্যথা ইত্যাদি।

হাইড্রেশন আমাদের শারীরিক ক্রিয়াকলাপের জন্য অপরিহার্য এবং আমাদের কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা রক্তের পরিমাণ কমিয়ে দেয়, যার অর্থ হল শরীর আরও সোডিয়াম ধরে রাখে, এর জন্য ক্ষতিপূরণ দেয়।


এর প্রভাবে, শরীর কৈশিকনালীগুলি বন্ধ করতে শুরু করে, যা খোলা কৈশিক এবং ধমনীতে আরও চাপ দেয় এবং রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়।


সেজন্য পানিশূন্যতা পূরণে খাবার স্যালাইন গুরুত্বপূর্ণ। হাইপ্রেসারের রুগীকে পানিশূন্যতার লক্ষণ অনুযায়ী স্যালাইন খাওয়াতে হবে ও রক্তচাপ নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে। সেজন্য একজন ফ্যামিলি ফিজিশিয়ানের গুরুত্ব অনেক বেশি।


প্রচন্ড গরমে খাবার স্যালাইন খাওয়া যাবে কি?



স্পোর্টস ড্রিংকগুলি ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন নয়, তবে যদি না পাওয়া যায় তবে সেগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে।


না, মোটেই নিরাপদ নয়। আগে জানতে হবে কে খাচ্ছেন, কেন খাচ্ছেন।


আজকাল দেখছি খাওয়ার স্যালাইন ডায়রিয়া ও কলেরার পানিশূন্যতায় চিকিৎসার পাশাপাশি আরও অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে- যেমন, ব্যায়ামের পরে বা একজন খেটে খাওয়া মানুষ যখন গরমে অনেকক্ষণ ধরে কাজ করতে থাকে তখন ঘামের সঙ্গে প্রচুর পানি ও লবণ তার শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়ার ফলে তার দেহেও পানিশূন্যতা দেখা দেয় এবং এ সময় খাওয়ার স্যালাইন পান করে সেই ব্যক্তি পানি ও লবণ উভয় উপাদানই পূরণ করতে পারেন এবং স্যালাইনে বিদ্যমান গ্লুকোজ বা চিনি তাকে বাড়তি শক্তি জোগাতেও সাহায্য করে, ফলে ব্যক্তির স্বস্তি ও সুস্থতা ফিরে পাওয়াটাই স্বাভাবিক এবং তাই ঘটে থাকে।


অনেকেই বলেন শুনেছি একটু দুর্বল লাগলে তারা খাওয়ার স্যালাইন খেলে বেশ সবলবোধ করেন।


যদি ওই ব্যক্তি উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের অসুস্থতাজনিত রোগে ভুগতে না থাকে এবং বয়সে তরুণ থাকেন বা ডায়াবেটিস রোগে ভুগতে না থাকেন তবে এতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হওয়াই স্বাভাবিক।


অনেক প্রান্তিক পর্যায়ের চিকিৎসক রোগীর ব্লাড প্রেসার লো হলে রোগীকে খাওয়ার স্যালাইন গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করে থাকেন যা সেই রোগীদের বেলায় ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে।


কারণ আমরা জানি যারা হার্ট ফেইলিওরে ভুগছেন তাদের শরীর এমনিতেই দুর্বল থাকে এবং তাদের অনেকেরই ব্লাড প্রেসার লো থাকে, তার সঙ্গে তাদের শরীরে যেমন হাত, পা ও মুখে পানি জমে ফুলে যায়।


এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা রোগীকে লবণ ও পানি সীমিত পরিমাণে গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করে থাকেন এবং ক্ষেত্রবিশেষে শরীর থেকে লবণ ও পানি বের হওয়ার মেডিসিন দিয়ে করে থাকেন, কাজেই এ ধরনের রোগীদের বেলায় খাওয়ার স্যালাইন গ্রহণ করা রোগীর জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।


সর্বশেষে এটাই বলতে চাই আপনি যদি কোন ধরনের হার্টের অসুস্থতায় ভুগতে থাকেন, আপনার যদি উচ্চ রক্তচাপ বিদ্যমান থাকে, আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন বা বয়স যদি ৬০ বছরের বেশি হয়ে থাকে অথবা আপনি যদি অন্য কোনো ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তবে কখনোই চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত খাওয়ার স্যালাইন গ্রহণ করবেন না এবং তা করলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।

শ্রদ্ধা দিলীপ মহলানবিশ



খাওয়ার স্যালাইন উদ্ভাবনের অন্যতম গবেষক বাংলাদেশের দরদি এই চিকিৎসক, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের শরণার্থীশিবিরে কলেরা-ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের নিরাময়ে কাজ করেছেন।


পরে আইসিডিডিআরবিসহ বিশ্বখ্যাত অনেক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই চিকিৎসক খাওয়ার স্যালাইন উদ্ভাবনের অন্যতম। ১৬ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গে প্রয়াত হলেন।


শুরুণার্থী শিবিরে কেবল খাওয়ার স্যালাইন দিয়ে বাঁচিয়ে তুললেন হাজার হাজার মানুষ। পরে এর ওপর ভিত্তি করে প্রকাশ করলেন একটি গবেষণা প্রবন্ধ, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।


চাঁদপুরের মতলবে এর আগেই অবশ্য খাওয়ার স্যালাইনের সবচেয়ে বড় ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালটি হয়ে গেছে। পরিণতিতে খুব দ্রুতই বৈশ্বিক স্বীকৃতি পায় খাওয়ার স্যালাইন।


সতর্কতা



ওআরটি সঠিকভাবে পরিচালনা করা সত্ত্বেও বমি দীর্ঘায়িত হলে শিরায় তরল প্রতিস্থাপন করা উচিত; অথবা ওআরটি দেওয়া সত্ত্বেও ডিহাইড্রেশনের লক্ষণগুলি খারাপ হয়; অথবা ব্যক্তি চেতনা হ্রাসের কারণে পান করতে অক্ষম; অথবা অন্ত্রে বাধাপ্র মাণ রয়েছে।


সূত্র, নিউনিসেফ। আইসিডিডিআর, বি


মন্তব্যসমূহ