ইমরান খানের বিবাহিত জীবন

ইমরান খানের  জীবনে নারী  

অনেকেই বলেন ইমরানের বিবাহিত জীবন সুখের নয়। কিন্তু তিনি এখন যথেস্ট সুখী মানুষ। সুখের জন্য কবি সুনীলের ভাষায়, সেই নীল পদ্মের জন্য যত কষ্টই হোক, তিনি সেই নীল পদ্মের খোঁজ করতে রাজি ছিলেন। ইমরান ও ঠিক তাই। তিনি ইহুদি নারী বিয়ে করেছেন, হিরোইন মডেল, নিউজ প্রেজেন্টার সকলের সাথে সম্পর্ক করেছেন। এখন একজন পীর নারীর সাথে সংসার করছেন। সব সুখের জন্যই করেছেন।

বিবিসির সংবাদ পাঠিকা রেহাম খান ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন ও তার একটি জার্মান শেফার্ড কুকুর ছিল। তিনি ব্রিটিশদের মত বেডরুমে কুকুর নিয়ে ঘুমাতেন।

ইমরান পূর্বসূরি জেনারেল পারভেজ মোশাররফ হতে উত্তরাধিকার সূত্রে কিছু বেলজিয়ান কুকুর পেয়েছিলেন।  তিনি নিজে ওসব কুকুর পুষতেন কিন্তু স্ত্রীর এই কুকুর নিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস সহ্য করতে পারতেন না। ইমরান না থাকলে তিনি ওই কুকুর নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন সারাদিন। এই সংক্রান্ত বিরোধ ই পরে তাদের স্বল্পকালীন বিয়ে যা একবছরও টিকেনি, সংসার ভাঙার জন্য দায়ী হয়।

বলে রাখা ভাল ,,, কুকুর আমারও ছিল কিন্তু স্ত্রীর ধার্মিকতায় সংসারের জন্য তাকে ত্যাগ করতে আমি বাধ্য হই। কিন্তু ইমরান খান ত আমার মতন আপোষকামী ছিলেন না! আর আমার ধার্মিক স্ত্রী যখন নামাজ পড়ে ও যাকাত দেয়, তার যত দোষ থাকুক না কেন, সেসব ভালবাসায় পরিণত হয়। ইমরানের বর্তমান স্ত্রী পিংকি পীরের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে।

মডেল জেমাইমা, প্রেজেন্টার রেহাম ও পীর পিঙ্কি খান রেহাম খানের জার্মান শেফার্ড ইমরানের বেলজিয়ান হাউন্ড ডগ

ইমরান খানের বিবাহিত জীবন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তিনি যথেষ্ঠ স্বাধীনচেতা মানুষ। ইমরান তার ইঞ্জিনিয়ার পিতার চার কন্যার জন্মের পর প্রথম ছেলে সন্তান হিসেবে জন্ম নেন। তিনি যথেস্ট আদরে বড় হয়েছেন ও আপোষহীন ছিলেন বলা যায়।

চমৎকার দম্পতি ছিল ইমরান জেমাইমা

যখন রাজনীতি ছিলনা জীবনে।প্রথম স্ত্রী জেমাইমা গোল্ডস্মিথ ইংল্যান্ডের অন্যতম ধনী পরিবারের মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও তিনি ইমরানের যৌথ পরিবারে বেশ অনেকদিন প্রায় ৯ বছর ঘর করেছিলেন যা ব্রিটিশ মডেলদের জন্য দুর্লভ। এ ধরনের মেয়েরা যৌথ পরিবারে থাকতে রাজি হয়না।

জেমাইমার বাবা ইমরানের সাথে বিয়েতে আগ্রহী ছিলেন না তবে মেয়ের জিদের কারনে তিনি এই বিয়েতে মত দেন, তিনি তার কন্যাকে দুই বছর কোন সন্তান না নিয়ে সংসার করতে উপদেশ দেন, যদি এরপরও সংসার টিকে তবে তখন সন্তান নিতে অনুরোধ করেন । কিন্তু বিয়ের পরের বছরই তারা সন্তান নেন। সবকিছুই ভাল চলছিল কিন্তু বিরোধ বাধে যখন জেমাইমা পাকিস্তান থেকে প্রত্নতাত্ত্বিক বহু নিদর্শন ব্রিটেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন, যা একসময় পাকিস্তানের ৪০০ বছরের পুরনো ইসলামিক যুগের ক্যালিগ্রাফি টাইলস নিয়ে বিমানে উঠার সময় হাতে নাতে ধরা পড়েন। কোহিনুর থেকে শুরু করে ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশের প্রায় সকল দামি প্রত্নসম্পদই চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল এবং আন্তর্জাতিক বাজারে যে ওসবের ভীষন দাম সেটা ব্রিটিশ ধনকুবেরের মেয়ে জেমাইমার বুঝতে দেরি হয়নি ।

ইমরানের দুই ছেলে কেনিয়াতে কোন এক ঈদের দিন। যদি সত্যিই জেমাইমার সাথে ইমরানের সম্পর্ক এখনো অটুট থাকতো 
তবে ইমরান খান ভারতের রাজীব গান্ধীর মত সমস্যায় পড়তেন।জেমাইমা কখনোই চায় নি ইমরান রাজনীতি করুন , তাই ডিভোর্স এর পর ইমরানের মত আরেক প্লেবয় ব্রিটিশ অভিনেতা সুদর্শন হিউ গ্রান্টের সাথে চুটিয়ে প্রেম করছেন এখন)।

স্ত্রী বিজাতীয় ও বিধর্মী হওয়ায় পাকিস্তান ও ভারতের রাজনীতিতে কেউই সুবিধা করতে পারেননি। মনমোহন সিংয়ের মত আরো অনেক বিজ্ঞ রাজনীতিক দলে থাকা সত্ত্বেও সোনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের মূল ক্ষমতা ছাড়তে মোটেও রাজি ছিলেন না আর ভারতের জনগণও একজন বিদেশিনীকে পুরোপুরি বিশ্বাস করতে প্রস্তুত নয়! তাই এই অধমের মতে সোনিয়া দলীয় প্রধান থাকলে কংগ্রেসের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য । রাহুল গান্ধী বৃথাই চেষ্টা করে চলেছেন শ্বেতাঙ্গ বুড়িটাকে দলের মূল ক্ষমতায় রেখে। এমনকি এটা বলা উচিত হবে কিনা জানিনা, বাংলাদেশ এর ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী সজীব ওয়াজেদ জয় কেও বিদেশিনী স্ত্রী সম্পর্কিত বিষয়ে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সংকট মোকাবেলা করতে হবে। বিরোধীদলগুলো মুখিয়ে থাকবে এই বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে। একশ্রেণীর মানুষ এটা বিশ্বাস করবে যে, জেমাইমা বা সোনিয়া গান্ধী বা ,,,,,,, এরা দেশের তথ্য বিদেশে পাচার করবে, তার চেয়েও বড় কথা এরা কেউ জেমাইমার মত ইহুদি হলে জাতীয় ধর্মের আভিজাত্য বিনষ্ট হবে।

পুরান চাল ভাতে বাড়ে।

ইমরানের তৃতীয় ও বর্তমান স্ত্রী ও আধ্যাত্মিক গাইড বুশরা মানেকা শান্তশিষ্ট , যেমন বউ উপমহাদেশের পুরুষ মানুষ চায়।

বুশরা মানেকা ইমরান খানের বর্তমান স্ত্রী যিনি তার আধ্যাত্মিক উপদেষ্টা ছিলেন বেশ আগে থেকে। বুশরা মানেকার বয়স ৪০ এর মধ্যে । তিনি ফরিদ মানেকাকে বিয়ে করেছিলেন যিনি ইসলামাবাদের একজন কাস্টমস কর্মকর্তা এবং পাঁচ সন্তানের জননী ছিলেন। তিনি "পিংকি পীর" নামে পরিচিত । ইমরান খান মূলধারায় নিশ্চিত করেছেন যে তিনি সর্বদা মানেকার নির্দেশনাকে মূল্য দিয়েছেন এবং সম্ভবত সে কারণেই তিনি তার একজন সঙ্গী খুঁজে পেয়েছেন( যদিও এত ভালোবাসা সত্ত্বেও তাদের কোন সন্তান হয়নি এখনো)!। পাঁচ সন্তানের একজন মহিলার মাঝেই ইমরান আধ্যাত্মিকতার শান্তি পেয়েছেন। তাই ত বলি,

পিংকি পীর অনেক আগেই নাকি ইমরানের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি পাকিস্তান এর সংবিধানকে রাসূলুল্লাহ সা: আ: এর মদিনা সনদের আদলে দেখতে চান কিন্তু তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও সন্ত্রাসের ঘোর বিরোধী । বিধবা, দরিদ্র ও এতিম শিশুদের জন্য তিনি গোপনে অনেক কাজ করে চলেছেন বলে কিছু বক্তব্য সামনে এসেছে।

খেলোয়াড়ি জীবনে ইমরান যেমন নতুন বলে ভালো বোলিং করতেন, পুরোনো বলেও রিভার্স সুইং ভালই করাতে জানতেন। বিয়ের ক্ষেত্রেও তাই। আর ক্যাপ্টেন্সি তাঁর মজ্জাগত। আফগানিস্তানে যে খেলাটা খেললেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত ওয়াক ওভার দিয়ে দিল দুঃখে । তিনি নির্লোভ, সাহসী। কাশ্মীর নিয়ে এখনো প্রতিটি আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে বক্তব্য রেখে চলেছেন যেখানে অনেক আরব দেশ কাশ্মীর কে ভুলে গেছে।

চীন ও ইরানের উপর নজরদারির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি ড্রোন সেন্টার পাকিস্তানে তৈরির অনেক লোভনীয় অফার সম্প্রতি তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। তুরস্কের সাথে ঘনিষ্ঠ না হওয়ার জন্য যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের হুমকিকে গ্রাহ্য করেন নি। এসবের জন্য বর্তমান স্ত্রীর পূর্ন সমর্থন পেয়েছেন।

ইতিহাস যাই হোক না কেন, অবশ্যই একটি সুখী দাম্পত্য জীবন ভালবাসা, সাহচর্য এবং পরিপূর্ণতা আনতে পারে জীবনে । আমরা কামনা করি এই ইমরান খান ও বুশরা দম্পতির একসাথে সুখী জীবন সফল হোক। উপমহাদেশে শান্তি আসুক। ধন্যবাদ।

মন্তব্যসমূহ