যারা বাকরখানি খান নি তারা গোলাপ জামের পরোটা খেতে পারেন। জিনিস দুটো হলেও স্বাদ একই। কার্বোহাইড্রেট এর বস্তা।
'পাপর কা পরাটা ' এমন অদ্ভুত জিনিসও মানুষ খাচ্ছে, ভাঁজা পাপর গুঁড়ো করে আটার 'পুরে পুরে তারপর ভাজছে। গোলাপ জামও তাই, তেলে আর রসে ভাজা মিষ্টিটা পরোটায় দিয়ে ভাজছে আমাদের রসনা মিটাতে। ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি রুটি, পরোটা হলো পৃথিবীর প্রথম প্রস্তুতকৃত খাদ্য মানুষের।
মাছ , মুরগি ভেঁজে সেটাকে আবার রান্না করছি। ডাবল তাপে আমিষের 'জেলাটিন' বানিয়ে খাচ্ছি। রান্না করা ভাত আবার ফ্রাই করে ফ্রায়েড রাইস নামে 'প্রতিরোধী স্টার্চ' খাচ্ছি। সেদ্ধ করা আলুভর্তা আটায় পুরে তেলে টেলেভেজে সিঙ্গারা বানিয়ে খাচ্ছি। সেজন্য ই ত দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার এত মানুষ এত বেঁটে।
আরো বেশি পরাটা খেতে পারেন, কিন্তু তেলের দাম আকাশ ছোঁয়া। তাই ভেবে দেখুন। আমি এখন তেলহীন পরোটা খেতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। চারকোনা রুটিই বলা যায়, তবে জামাকাপড় খোলার মত এই খুলে খেতে বেশ স্বাদ। তেলহীন পরাটা! এই নতুন আবিষ্কা রের জন্য স্ত্রীকে ধন্যবাদ দিই।
গোলাপ জাম
গোলাপজাম বিলুপ্ত প্রায় ফল। Malabar plum, Rose apple , Gulab jamun, এত সুন্দর নামের মত ফলটি খেতে অতি সুস্বাদু। ফল পাকলে গোলাপের মত কিছুটা গন্ধ বের হয় বলেই এ নাম। তবে কেন এমন ফল হারিয়েছি আমরা বাংলাদেশ থেকে!
অথচ এই গাছ দীর্ঘদিন বাঁচে (প্রায় ৪০/৫০ বছর) এবং ফল দান করে। গাছ মাঝারী আকৃতির, লাগানোর ২/৩ বছর পর থেকেই ফল সংগ্রহ করা যায়। গোলাপজাম গাছে মাঘ-ফাল্গুন মাসে ফুল আসে এবং বৈশাখ থেকে শ্রাবণ মাসের মধ্যে ফল পাকে। গোলাপজামের ফুলও খুবই দৃষ্টিনন্দন।
কারা এই ফলের বিরুদ্ধচারণ করে বিদেশী ফল আমদানি করছে?
গোলাপ জাম মিষ্টি
গোলাপও নেই, জামও নেই, তাহলে এই মিষ্টির নাম কেন গোলাপজাম? খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে অনেকেই ওস্তাদ, কিন্তু এই রূপসী মিষ্টির নাম 'গোলাপ জাম' কেন?
'গোলাপ' বা 'গুলাব' দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত, গুল মানে ফুল এবং আব মানে জল। অর্থাৎ সুগন্ধযুক্ত মিষ্টি পানি বা জল, চিনির শরবত তৈরি করলে তাতে সাধারণত একটি গন্ধ আসে এবং সেই জল মিষ্টি হয়ে যায়, যার কারণে একে গোলাপ বলা হয়। অন্যদিকে খোয়া থেকে ময়দা তৈরি করা হয়।
এমন অবস্থায়, এটিকে গাঢ় রঙ দেওয়ার জন্য ভাজা হয় এবং এই কারণে এটিকে জামুনের বা জামফলের সঙ্গে তুলনা করা হয়। বলা হয় এই মিষ্টিটি প্রথমে তুরস্কে তৈরি করা হয়েছিল, তারপরে তুরস্কের লোকেরা এটি ভারতে নিয়ে আসে এবং এটি মুঘল সম্রাট শাহজাহানের দরবারে প্রস্তুত করা হয়েছিল। অল্প সময়েই মিষ্টিটি ভারতে খুব জনপ্রিয় হয়েছিল এবং বর্তমানে এটি ভারতীয়দের পছন্দসই খাদ্য তালিকার একটি আইকন মিষ্টান্ন।
ইতিহাসবিদ মাইকেল করোন্ডাল জানান, গোলাপ জাম বা গুলাব জামুনের সঙ্গে লোকমান আল-কাদিও একটি মিষ্টি যা চিনির সিরাপ দিয়ে প্রস্তুত করা হয়। উভয়ের স্বাদই প্রায় এক, বাংলায় এটি পান্তুয়া নামে পরিচিত। আবার কেউ কেউ একে কালো জাম মিষ্টি বলে। কোথাও স্বাদ অনুসারে একে কাটাঙ্গি বলা হয়, আবার কোথাও একেই রসগুল্লা বলা হয়। কিছু গুলাব জামুন আকারে বড় হয় তো কিছু আবার হয় ছোট।
শুধু তাই নয়, রাজস্থানে তৈরি হয় গুলাব জামুন সবজি। চিনির পরিবর্তে মশলা এবং টমেটো ব্যবহার করা হয় এই খাদ্যটি বানাতে।
গোলাপ জাম পরোটা
প্রণালীঃ
- জলের মধ্যে চিনি মিশিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে এক সুতোর রস বানাতে হবে। ৩-৪ চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে দিতে হবে।
- ময়দার সাথে নুন, তেল মিশিয়ে জল দিয়ে নরম করে মাখতে হবে।
- গোলাপ জাম চটকে তার মধ্যে বাদাম ও পেস্তা কুচি মিশিয়ে নিতে হবে।
- পুর তৈরি।
- ময়দার লেচি কেটে নিতে হবে। লেচির মধ্যে গোলাপ জামের পুর ভরে পরোটার আকারে বেলে নিতে হবে।
- ঘী দিয়ে ভাজতে হবে। ভাজা হয়ে গেলে রসে ডুবিয়ে বা ওপর দিয়ে রস মাখিয়ে পরিবেশন করতে হবে।
আশা করি আমার গোলাপ জামের আখ্যান টি খাদ্য রসিকদের ভাল লেগেছে ।
পৃথিবী বিখ্যাত 🌯 পরোটাগুলো কী ⁉️👉»
সূত্র,1-Fried Bread Is A Tasty, Toasty Treat You'll Want To Eat Every Day - WKBW
মন্তব্যসমূহ