ওটিসি বা প্রেসক্রিপশন বিহীন ঔষধ কোনগুলো!

ওটিসি বা প্রেসক্রিপশন বিহীন ঔষধ

প্রেসক্রিপশন বিহীন ঔষধ!

স্বাস্থ্যের কথা


ব্যবস্থাপত্র ছাড়া লভ্য ঔষধ বা চিকিৎসা ছাড়পত্র ছাড়া ঔষধ বলতে সেই সব ওষুধ বোঝায় যেগুলো ক্রেতার কাছে সরাসরি ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই বিক্রি করা হয়।

যদিও ভাইরাস জনিত রোগে এন্টিবায়োটিক ঔষধ কাজ করেনা তবুও মৌসুমী বায়ু পরিবর্তন জনিত সময়ে এন্টি বায়োটিক এর ব্যবহার ব্যাপক বৃদ্ধি পায়।


ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া, বা ছোটখাটো শারীরিক সমস্যার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার প্রবণতা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে প্রবল।


কিন্তু গবেষণা বলছে, অ্যান্টিবায়োটিকের ভুল ব্যবহারের কারণে এ জাতীয় ওষুধ কার্যকারিতা হারাচ্ছে আশঙ্কা জনক হারে।



ওটিসি ওষুধ বলতে কী বোঝায়?


ওটিসি ওষুধ কেনার জন্য ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনের প্রয়োজন নেই। তবুও, তারা আসল ঔষধ। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, ওষুধের মিথস্ক্রিয়া এবং ওভারডোজ ঘটতে পারে।

'ওভার-দ্য-কাউন্টার (ওটিসি) মেডিসিন' মানে এমন ওষুধ যা ফার্মাসিস্টদের দ্বারা প্রেসক্রিপশনের প্রয়োজন ছাড়াই বিক্রি করার অনুমতি দেওয়া হয়। বাংলাদেশ, ভারতে এই শব্দটির কোনো আইনি সংজ্ঞা নেই।


প্রযুক্তিগতভাবে, সেই ওষুধগুলি ওটিসি হয় যদি না সেগুলিকে "শুধুমাত্র প্রেসক্রিপশনের ওষুধ " হিসাবে উল্লেখ করা হয়।


যদি ঔষধের প্যাকেটের গায়ে " শুধুমাত্র রেজিস্টার্ড চিকিৎসক দ্বারা নির্দেশিত " কথাটি লেখা থাকলে সেটি প্রেসক্রিপশন ব্যতিত বিক্রি দন্ডনীয় অপরাধ।


তবে নিম্ন লিখিত ঔষধগুলির ক্যাটাগরী বাংলাদেশের অ্যাসিটামিনোফেন, অ্যাসপিরিন, অ্যান্টাসিড, ডিকনজেস্ট্যান্ট, অ্যান্টিহিস্টামাইনস এবং জোলাপ জাতীয় ঔষধগুলি প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য otc ঔষধ।


তবে কোন ওষুধগুলি শিশুদের দেওয়া নিরাপদ নয় সে সম্পর্কে ডাক্তারের সাথে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ।


যুক্তরাষ্ট্রে ৮০টি থেরাপিউটিক বিভাগ যেমন ব্যথানাশক এবং অ্যালার্জি চিকিত্সা পণ্য otc।

ওটিসি ড্রাগ ফ্যাক্ট লেবেল কি?

লেবেল আপনাকে বলে যে ওষুধটি কী করা উচিত, কার এটি গ্রহণ করা উচিত বা করা উচিত নয় এবং কীভাবে এটি ব্যবহার করতে হবে।


ওটিসি ওষুধের লেবেলিং সবসময় ভোক্তাদের জন্য ব্যবহার এবং নিরাপত্তা তথ্য ধারণ করে। "ড্রাগ ফ্যাক্টস" লেবেল প্রবর্তনের সাথে, তথ্যগুলি আরও অভিন্ন এবং পড়া এবং বোঝা সহজ।



কীভাবে 💊 ঔষধের লেবেল পড়তে হয়⁉️👉


সর্বাধিক প্রেসক্রিপশন হীন ঔষধ কী


সর্বাধিক ব্যবহৃত ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধগুলির মধ্যে রয়েছে: কাশির সিরাপ ক্লোর্ফেনিরামিন, এমব্রক্সল, ব্যথা উপশমকারী যেমন অ্যাসিটামিনোফেন, অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন এবং নেপ্রোক্সেন। অম্বল এবং বদহজমের ওষুধ যেমন ওমেপ্রাজল, ল্যানসোপ্রাজল, সিমেটিডিন এবং অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড।

  • উপরের শ্বাসযন্ত্রের ঔষধ,
  • কিছু মৌখিক ব্যথানাশক,
  • অম্বল,
  • ডায়রিয়া বা অ্যান্টিপারস্পারেন্টস বা
  • কোষ্টকাঠিন্য ঔষধ

কোন এন্টি ডিপ্রেসেন্টস কি ওটিসি?

যদিও অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধগুলি শুধুমাত্র প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে পাওয়া যায়, সেখানে কিছু ওভার-দ্য-কাউন্টার (OTC) অ্যান্টিডিপ্রেশন ভেষজ এবং সম্পূরকগুলি আপনি চেষ্টা করতে পারেন।


এগুলির মধ্যে হালকা অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট গুণ রয়েছে এবং এটি গুরুতর নয় এমন লক্ষণগুলি থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করতে পারে।

আপনি ওভার দ্যা কাউন্টারে অ্যান্টিবায়োটিক কিনতে পারবেন ?

হ্যা,আপনি পারবেন।


সেরা ওটিসি সাময়িক ব্যথা উপশমকারী কি? জয়েন্টে ব্যথার জন্য সেরা ব্যথা উপশম ক্রিম। ভোল্টারেন আর্থ্রাইটিস পেইন জেল। ... পেশী ব্যথা জন্য ব্যথা উপশম ক্রিম জন্য সেরা. টাইগার বাম ব্যথা উপশমকারী মলম। ... সেরা কুলিং। মেনথল স্প্রে।

  • খাওয়ার গুলো ব্যতিত।
  • এন্টিবায়োটিক মলম ও ড্রপ ও পাউডার গুলো।
  • ব্যাসিট্রাসিন (নিওস্পোরিন)
  • পলিমিক্সিন (পলিস্পোরিন)
  • নিওমাইসিন (নিওস্পোরিন প্লাস ব্যথা উপশম)
  • প্রমোক্সিন।
  • বেনজয়েল পারক্সাইড

বাংলাদেশ এর OTC ঔষধসমূহ


বাংলাদেশে ওটিসি ঔষধ তালিকা

বাংলাদেশে এন্টি বায়োটিক রেজিস্টান্স প্রসঙ্গে। আইসিইউ এর ২৫ শতাংশ রুগী অধিকাংশ এন্টিবায়টিক রেজিস্টান্ট জনিত সমস্যায় ভুগছেন।


২.৩ লক্ষ ফার্মেসি আছে যেখানে ৩ লক্ষ মানুষ কাজ করে। প্রতিদিন ১০ লক্ষ প্রেসক্রিপশন বিহীন এন্টিবায়োটিক বিক্রি হয়। আই সি ইউ তে চিকিৎসাধীন ২৫% রুগীর মাঝে সেফালোস্পরিন গ্রূপ সহ একাধিক এন্টিবায়টিক রেজিস্টান্স আছে।

ভারতে otc ড্রাগ সমূহ


ভারতে প্রস্তাবিত ওটিসি ঔষধ গুলো

২০১৫ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ৬৫টি দেশের মানুষের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের তথ্য যাচাই করে তৈরি করা হয় এই প্রতিবেদন।


ঐ প্রতিবেদনে বলা হয় অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধের ভুল ব্যবহারের কারণে এই জাতীয় ওষুধের বিরুদ্ধে এক ধরণের প্রতিরোধ তৈরি হয় শরীরে। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ধরণের রোগের ক্ষেত্রে ওষুধের কার্যকারিতা হারায়।



প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক কেন?


যদিও অ্যান্টিবায়োটিকগুলি ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের চিকিত্সার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ, তবে তাদের অপব্যবহার করা হলে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে। চিকিৎসা নির্দেশনা ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা শুধুমাত্র একটি ভুল ওষুধের ডোজ এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকির দিকে নিয়ে যেতে পারে না কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়তে পারে।

সাধারণ কিছু রোগের জন্য ঔষধের দোকানদার যেসব ওষুধ দিতে পারে, সেগুলোকে otc বা "ওভার দ্যা কাউন্টার " ড্রাগ বলে। এই ঔষধগুলো তেমন বড় ক্ষতি করেনা। কিন্তু ঐসব দোকানদার সেগুলো ছাড়াও প্রেসক্রিপশন ছাড়াই এন্টিবায়োটিক দিয়ে থাকে।


অনেক শিক্ষিত লোকও এভাবে ঔষধ খেয়ে থাকেন।তারা জানেন এভাবে ওষুধ গ্রহণ করার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে।


"ওষুধ খেলে সাময়িকভাবে অসুখ ঠিক হয়ে যায়, তাই এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে সাধারণত চিন্তাই করা হয় না।" তারা বলেন।


এই ব্যাপারে সচেতনতার অভাব থাকার কারণেই সাধারণ মানুষ ওষুধ ভুলভাবে ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে।


কিছু সাময়িক অ্যান্টিবায়োটিক ওভার-দ্য-কাউন্টার (OTC) ওষুধ হিসাবে কেনা যেতে পারে। ওয়েন্টমেন্ট ও ড্রপ।



প্রেসক্রিপশন হীন ঔষধ সরকারি নির্দেশনা


ঔষধের অপব্যবহারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে- ঔষধ প্রশাসন।ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন বা ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ক্রেতার কাছে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করা যাবে না - সরকারের পক্ষ থেকে ওষুধের দোকানগুলোকে এমন একটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল গত বছর।

ড্রাগ (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৮২-এর অধীনে সর্বোচ্চ শাস্তি বর্তমানে ১০ বছরের কারাদণ্ড।


নতুন খসড়া অনুযায়ী, কেউ জেনে-শুনে বা ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো ওষুধে ভেজাল করলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অনধিক ১৪ বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ লাখ টাকা জরিমানা হবে।


একই শাস্তি অপরাধীদের জন্য যায় যারা একই জিনিস সংরক্ষণ করে, বিক্রি করে, বিতরণ করে বা প্রদর্শন করে।


বাস্তবায়ন নেই সরকারি নির্দেশনার। অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায় ঐ নিয়মের বাস্তবায়ন একেবারেই নেই।


ঢাকার মহাখালী এলাকার একটি ফার্মেসি থেকে বহুল ব্যবহৃত একটি অ্যান্টিবায়োটিক কিনতে চাইলে কোনো প্রশ্ন ছাড়াই ওষুধ বিক্রি করেন দোকানদার এমনি মত সাংবাদিক এর।


সরকারের নির্দেশনা সম্পর্কে দোকনদারের কাছে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান নির্দেশনা সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন।

তারপর যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসের সাথে জানান, যেই ওষুধটি কেনা হচ্ছে সেটি নাকি অ্যান্টিবায়োটিকই নয়!

বাধ্য হয়ে অ্যান্টিবায়োটিকের সুপারিশ?


প্রেসক্রিপশন ছাড়া সবচেয়ে বেশী এন্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হয় ইজিথ্রোমাইসিন, শিপ্রফলক্সাসিন, অন্যান্য, সেফালোস্পরিন।

২০১৪ সালে বাংলাদেশের রাজশাহীর কয়েকটি এলাকার মানুষের তথ্য নিয়ে করা একটি গবেষণায় উঠে আসে যে সেসব অঞ্চলের প্রায় ২৭ শতাংশ মানুষ সাধারণ অসুখের ক্ষেত্রে নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ খান।


অর্থাৎ ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজনও বোধ করেন না তারা।


আবার ডাক্তাররাও অনেকসময় দরকার না থাকলেও রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ খাওয়ার সুপারিশ করে থাকেন - এমন অভিযোগও পাওয়া যায় প্রায়ই।


চাঁদপুরের একটি হাসপাতালে মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মরত নাজমা আহমেদ বলেন ডাক্তাররা অনেক সময় বাধ্য হয়েই রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ সুপারিশ করে থাকেন।


"মনে করুন, রোগী দুইদিন জ্বরে ভুগে এলো ডাক্তারের কাছে, তার সাথে কথাবলে মনে হলো ভাইরাল জ্বর, যা স্বাভাবিকভাবেই হয়তো ৫-৭ দিনের মধ্যে সেরে যাবে।"


মার্চ ২০১৮ এবং মার্চ ২০১৯ এর মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালের বহিরাগত ফার্মেসি বিভাগে অ্যান্টিবায়োটিকের সর্বাধিক নির্ধারিত ক্লাস।


"কিন্তু এমন ক্ষেত্রে রোগীকে ৫-৭ দিন অপেক্ষা করতে বললে অনেকসময়ই তারা ক্ষুন্ন হন। তারা চান ডাক্তার এমন ওষুধ দিক যাতে খুব দ্রুত রোগ সেরে যাবে।"


রোগীদের মধ্যে নিজেদের জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে বা অনেক সময় চাপে পরেই ডাক্তাররা অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন বলে মনে করা হয়।


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিকের ভুল ব্যবহার অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে আবারো ভয়াবহ রূপে ফিরে আসতে পারে যক্ষ্মা, টাইফয়েড, নিউমোনিয়ার মত রোগব্যাধি।

সূত্র, বিবিসি হেলথ, রিসার্চ গেট, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়,


মন্তব্যসমূহ