ঢাকা মেডিকেল,
পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম হাসপাতাল হওয়ার পথে!
নির্মাণের মহাপ্রকল্প হতে চলেছে ঢাকা মেডিকেলে। বাংলাদেশের সবথেকে কার্যকরী বিনিয়োগের মেগাপ্রকল্প বলা হচ্ছে একে ।
100 বছরের পুরনো এ ভবন, ঢাকা মেডিকেল কলেজে এখন ৬০টির বেশি বিভাগ ও উপ-বিশেষজ্ঞ বিভাগ রয়েছে। ২৬০০ শয্যার এ হাসপাতালে ৩৫০০ এর অধিক রুগী প্রতিদিন ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেন। সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৫০০ রোগীও ভর্তি ছিল এ হাসপাতালে। অতিরিক্ত রোগী হাসপাতালের মেঝে, বারান্দা ও সিড়ির পাশে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ কখনোই কোনো রোগীকে বিনা চিকিৎসায় ফেরত পাঠায় না। যদি ৫ হাজার শয্যার ব্যবস্থা করা তাহলে ওয়ার্ড, বারান্দা ও সিঁড়িতে এখন ভর্তি হওয়া রোগীদের পর্যাপ্ত শয্যা সেবা দেয়া সম্ভব । বাইরে 1,000টি ভাসমান শয্যা থাকবে এমন রোগীদের জন্য যারা ছোট সার্জারি, ডায়ালাইসিস বা কেমোথেরাপির জন্য আসবেন এবং সেখানে মাত্র একদিন থাকবেন।
সরকার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে একটি অত্যাধুনিক চিকিৎসা সুবিধায় রূপান্তরিত করার জন্য একটি নতুন নকশা প্রণয়ন করেছে যাতে ২৭টি নতুন বহুতল ভবন নির্মাণ এবং শয্যা সংখ্যা ৫ হাজারে উন্নীত করা যায়। চিকিৎসা এবং নার্সিং শিক্ষা এর সাথে যুক্ত হবে। স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষার স্বাদ ফোকাস করা হবে কিন্তু এটি বিশ্ববিদ্যালয় হবে না।
হাসপাতালে দুটি জরুরি ওয়ার্ড এবং দুটি আউটডোর ও থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পুরো কমপ্লেক্সের নতুন নকশা করা হয়েছে।
আনুমানিক ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন নকশা বাস্তবায়ন করা হবে। ২০২৭ সালের মধ্যে নতুন সুবিধাগুলি উদ্বোধন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন নকশা অনুযায়ী, ১৭ তলা বিশিষ্ট ছয়টি হাসপাতাল ভবন থাকবে। আবাসিক ভবনসহ অন্যান্য ভবনে ২০ তলা থাকবে। হাসপাতালের আইটি সিস্টেম সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড করা হবে।
ঢাকা মেডিকেলের আধুনিকায়নের পর বর্তমান সক্ষমতা দ্বিগুন বৃদ্ধি পাবে। মোট হাসপাতালের বেডের সংখ্যা হবে ৫০০০। আর এর মাধ্যমে বেডের ধারন ক্ষমতার হিসাবে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ হাসপাতাল হবে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল।
বর্তমানে বেডের সংখ্যা অনুযায়ী বিশ্বের সবথেকে বড় হাসপাতাল গুলি -
১. First Affiliated Hospital of Zhengzhou University Henan China
বেডের সংখ্যা -৭০০০
২. West China Medical Center Chengdu China
বেডের সংখ্যা - ৪৩০০
৩. National Center for Mental Health Mandaluyong Philippines
বেডের সংখ্যা- ৪২০০
এছাড়া শ্রীলঙ্কায় রয়েছে ৩৪০৪ বেডের হাসতপাল। ভারতের বৃহৎ হাসপাতাল Government Medical College, Kozhikode Kozhikode India এ বেডের সংখ্যা ৩০২৫।
শুধু ঢাকা মেডিকেল নয়। BSMMU এ বর্তমান বেডের সংখ্যা ১৯০০। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে ১০০০ বেডের একটি সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের নির্মাণ কাজ চলছে। এটি শেষ হলে এটিও সক্ষমতার বিচারে বিশ্বের বৃহত্তম ১৫ টি হাসপাতালের ভেতর স্থান করে নিবে।
সরকারি হাসপাতালের সুবিধার সরাসরি উপকারভোগী হল দেশের হতদরিদ্র অসহায় মানুষগুলি। প্রতিনিয়ত চিকিৎসা খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিকের চিকিৎসা নিয়ে বাণিজ্যে নি:শেষ হয়ে গেছে বহু পরিবার।
এদেশে গড়ে উঠেছে সহস্রাধিক মেডিকেল কন্সাল্টেন্সি ফার্ম যারা ভারতের হাসপাতালগুলির এজেন্ট হিসাবে কাজ করে। প্রতিবছর কয়েক বিলিয়ন ডলার অর্থ অন্য দেশে চলে যায় শুধু মাত্র এই চিকিৎসার জন্যই। বিশেষ করে ভারত এক্ষেত্রে সবথেকে লাভবান হয়। সরকারি হাসপাতালের সুবিধা বাড়লে চিকিৎসা বাণিজ্যের অনেকের ব্যাবসায় ভাটা পড়বে। সাধারন মানুষের মুক্তি মিলবে। প্রতিবছর সামাজিক ও আর্থিক ভাবে অনেক মধ্যবিত্ত বা উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবার শুধুমাত্র উচ্চ চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে যেয়ে দারিদ্র্য সীমার নিচে চলে যায়।
আশা করি এ হাসপাতাল দেশের আপামর মানুষের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসবে।
সূত্র, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড,
মন্তব্যসমূহ