এই দুনিয়ায় চিনি এক অসাধারণ স্বাদের নাম। চিনিবিহীন চা কিংবা মিষ্টি, সবই বিস্বাদ। চিনি এক মজাদার , নেশাদায়ক স্বাদ দেয় যা অন্য কিছুতে পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু ভাবতে অবাক লাগে, এই চিনি আমাদের শারীরিক কোন উপকার করে না। মোটা হওয়া, ওজন বাড়ানো, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি, হৃদরোগ, উদ্যম হীনতা, স্মৃতিক্ষয় প্রভৃতি রোগের কারণ এই চিনি।
পুষ্টি বিষয়ক সেরা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন চিনির ব্যবহার আমাদের ঝুঁকিপূর্ণ জীবনের দিকে ঠেলে দেয়।
বাড়তি চিনিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ দিন শেষে আমাদের মস্তিষ্কে ক্লান্তি আনে আর শরীরকে দ্রুত বার্ধক্যে পৌঁছে দেয়।
তবে উপায় কি? অবশ্যই চিনি খাওয়া কমাতে হবে। এর ফলে যে সমস্ত লাভ হতে পারে আমাদের শরীরের তা হলো:
এক বছর চিনি না খেলে কি হবে
- উদ্বেগ এবং বিষণ্নতা, পেট ফোলাভাব এবং ডায়রিয়া,
- ক্ষুধা,
- ঠাণ্ডা লাগা বা অনিচ্ছাকৃত কাঁপুনি,
- পেশী ব্যথা,
- মাথাব্যথা,
- ক্লান্তি,
- বমি বমি ভাব।
চিনির পুতুল বা চিনির বলদ কি
' চিনির পুতুল ' বাগধারাটির অর্থ কি? পরিশ্রম কাতর বা অল্পতেই হাপিয়ে পড়ে এমন কেউ। চিনির পুতুল; সুসজ্জিতা কিন্তু নির্বোধ সুন্দরী তরুণী।
কিংবা 'চিনির বলদ' ? যে নিষ্ফল পরিশ্রমী। চিনির বলদ বাগধারার অর্থ হলো- ভারবাহী কিন্তু ফল লাভের অংশীদার নয়। চিনি যদি এতোই দামি হয় তা নিষ্ফল কাজের সাথে যুক্ত করে আমাদের পূর্ব পুরুষরা বাগধারা গুলো ব্যবহার করতো কেন?
চিনি যে পুষ্টিহীন জিনিস, তৃপ্তি ছাড়া তা কোন কাজে আসেনা, সেটা ঋষি মুনিরা বুঝতে পারলেও আমরা এখনও বুঝি নাই। সেজন্য চিনি ছাড়া মেহমান আপ্যায়ন অসম্ভব হয়তো।
কিন্তু চিনি খাওয়া হঠাৎ বন্ধ করলে কি হবে ভাবুন ত একবার।
চিনি বন্ধ করার একদিন পরে
এইদিন টি খুব কঠিন। উইথড্রয়াল সিনড্রোম দেখা দেবে। মাথাব্যথা, শক্তিহীনতা এসবও দেখা দিতে পারে। চিনির প্রতি অতিরিক্ত টানের কারনে এসব ঘটে।
চিনিবিহীন শরীর ইতিমধ্যে আরোগ্য লাভ করতে শুরু করে দেয়। কারন চিনি ক্ষতিকর কিছু জীবাণু যেমন ক্যান্ডিডা, এর শক্তির উৎস। ফলে আমাদের অন্ত্রে এসব জীবাণুর বংশবৃদ্ধি কমে যায়।
এক সপ্তাহ পর কি হয়:
এক সপ্তাহের পর শরীর এর জাদুকরী উপকার পেতে শুরু করে। ইনসুলিনের মাত্রা সঠিক পর্যায়ে আসে ও শরীরের প্রদাহ সমূহ কমে যায়। ইনসুলিনের মাত্রা সঠিক লেভেলে আসার ৭২ ঘন্টার মধ্যে অন্যান্য হরমোন বিশেষতঃ চর্বি জমানো ও প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ হরমোন সঠিক লেভেলে আসে।
আপনার ত্বক উজ্জ্বলতা ছড়াবে, মুখের ফোলা ভাব কমে আসবে।
এক মাস পর কি হবেঃ
চিনির প্রতি আসক্তি কমে যাবে। মিষ্টি জাতীয় খাবার দেখে আর লোভ হবে না। কারন ফাঙ্গাল ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণে চলে আসলে ও প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে এলে আমরা হালকা বোধ করব। নিজেকে বাড়তি ওজনের হাত হতে রক্ষা করার জন্য , ভালো বোধ হবে।
রক্তে সুগার লেভেল ঠিক ও ভারসাম্যপূর্ণ থাকায় মানসিক প্রশান্তি আসবে, পেটের নাড়িভুঁড়ি বা অন্ত্র অস্বাভাবিক আচরণ করবে না। সুস্থ অন্ত্র প্রদাহ কমিয়ে দেবে।
ছয় মাস পর কি হবেঃ
চিনিযুক্ত খাবারের প্রতি আকর্ষণ একেবারে কমে আসবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে, পেটের চামড়া মেদহীন হবে। চামড়ায় বয়সের ছাপ পড়া কমে যাবে। ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ এর ঝুঁকি থাকবে না।
এক বছর পর কি হবেঃ
মুখের ব্রণ কমে আসবে , চামড়ার সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে, চুলকানি কমে যাবে ও বয়সের বলিরেখা কমে যাবে। এসময় রক্তে চিনির ক্ষতিকর প্রভাব মোটেও থাকবে না।
যদি রক্ত পরীক্ষা করেন দেখা যাবে , অন্যদের তুলনায় সুগার লেভেল খুব ভালো আছে। হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও কম।
আমরা যখন চিনির বলদ
পেট খারাপ কি?
সাবস্ক্রাইব করুন। স্বাস্থ্যের কথা।
মন্তব্যসমূহ