খাদ্য ভেজাল

খাদ্য ভেজাল, ফুড এডিটিভ কাকে বলে, খাদ্য সংযোজন কাকে বলে ,

খাদ্য ভেজাল

ICDDRB এর তথ্যানুসারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) তাদের সমীক্ষায় প্রমাণ পেয়েছে প্রায় প্রতিদিন ৫০১ জন মানুষ ডায়রিয়াজনিত রোগাক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসে যার পেছনে ভেজাল খাদ্য গ্রহণ দায়ী।

খাদ্য ভেজাল কি

যখন কোন সঠিক খাবার বা উৎকৃষ্ট খাবারের সঙ্গে খারাপ খাবার বা নিকৃষ্ট খাবার মেশানাে হয় তাকে খাদ্যে ভেজাল বলে। পৃথিবীতে বহুরোগ সৃষ্টির জন্য খাদ্য উপাদান দায়ী।


বাংলাদেশে অধিকাংশ খাদ্যসামগ্রী অনিরাপদ বা বিভিন্ন মাত্রায় ভেজালযুক্ত। এ সমস্যা খাদ্য প্রস্তুত করা থেকে ভক্ষণ পূর্ব পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে বিদ্যমান। খাদ্য প্রস্তুতকারক, প্রক্রিয়াজাতকারক, রেস্তোরাঁ, ফাস্ট ফুডের দোকান প্রত্যেকেই এ ভেজালীকরণ প্রক্রিয়ায় জড়িত। এ প্রক্রিয়া জনস্বার্থের জন্য মারাত্মক হুমকি, যা নানাবিধ রোগব্যাধীর জন্য দায়ী।



কোক, পেপসি এর রঙ কি দেয়? যুক্তরাষ্ট্রে ১০টি রাজ্যে কোলা পণ্য পরীক্ষা করার পর, পরিবেশগত স্বাস্থ্য কেন্দ্র বলেছে যে এটি সমস্ত কোলা পণ্যগুলিতে ৪-মেথিলিমিডাজল (4-MEI) নামক ক্যারামেল রঙের এজেন্টের উচ্চ মাত্রা পেয়েছে। এই ক্যারামেল রঙের এজেন্ট প্রাকৃতিক ক্যারামেল থেকে তৈরি করা হয় না (যা তারা দাবি করে), তবে অ্যামোনিয়া জড়িত একটি রাসায়নিক প্রক্রিয়ায়।¹

উৎকৃষ্ট দ্রব্যের সাথে নিকৃষ্ট দ্রব্যের মিশ্রণকে ভেজাল বলে। অন্য কথায় খাদ্যের পরিমাণ, স্থায়ীত্ব অথবা স্বাদ বৃদ্ধির জন্য কাঁচা বা প্রস্তুতকৃত খাদ্য সামগ্রীতে এক বা একাধিক ভিন্ন পদার্থ সংযােজন।


নিরাপদ খাদ্য আইন- ২০১৩ আলােকে “বিভিন্ন উপায়ে খাদ্যে পরিবর্তন সাধন করে মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, আইনের অধীন নিষিদ্ধ, খাদ্য দ্রব্যের ক্ষতি হয়েছে, গুণাগুন বা পুষ্টিমান কমে গেছে, খাদ্য ক্রেতার আর্থিক বা স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়েছে” এমন খাদ্যই ভেজাল খাদ্য।


২০০৩ সনে একটি গবেষণায় দেখা যায় পূর্ববতী দশকের প্রায় ৫০% খাদ্য সামগ্রীই ভেজালপূর্ণ যা ঢাকার জনস্বাস্থ্য বিভাগ (IPH) দ্বারা পরিচালিত ছিল। একইভাবে সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, ২০০১-২০০৯ সন পর্যন্ত গৃহীত প্রায় অর্ধেকের বেশি খাদ্যসামগ্রীই ভেজালপূর্ণ।



অস্বাস্থ্যকর খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাদ্য রপ্তানি শিল্পের গুরুতর প্রভাব ফেলে যেমন ১৯৯৭ সালে EU এদেশ থেকে চিংড়ি রপ্তানি নিষিদ্ধ করে অস্বাস্থ্যকর প্রক্রিয়াজাতকরণের কারণে।


খাদ্যে ভেজালের ধরণ

খাদ্যে ফরমালিন, DDT ও অন্যান্য বিষাক্ত দ্রব্য -এর ব্যবহার

ফরমালিনের ব্যবহার:


সবজিকে ফরমালিনমুক্ত করার সব চাইতে ভালো পদ্ধতি হলো- ভিনেগার ও পানির মিশ্রণে (পানিতে ১০% আয়তন অনুযায়ী) ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখা।

ফরমালিন একটি বর্ণহীন তীব্র গন্ধযুক্ত রাসায়নিক পদার্থ যা টেক্সটাইল, কাগজ, রঞ্জক, অবকাঠামো শিল্প এবং মানুষের মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য সুপরিচিত। এটি পানিতে দ্রবীভূত ফরমালডিহাইড ও গ্যাস থেকে সৃষ্টি।

এটা মাছ, ফল, বিভিন্ন খাদ্য দ্রব্য সংরক্ষণে ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হয় যা জনস্বাস্থের জন্য চরম হুমকি। পানিতে মিশ্রিত ফরমালিন মাছ এবং ফল সতেজ রাখতে ব্যবহৃত হয়।

এটা সাধারণত মৃত জিনিস পচাতে বাধা দেয় যা বর্তমানে বিভিন্ন খাদ্য দ্রব্য সংরক্ষণের ব্যবহৃত হচ্ছে।

বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহার:


কিভাবে জানবো মাছে কীটনাশকের উপস্থিতি? মাছি বলে দেবে সেটি বর্জনের মাধ্যমে!

পৃথিবীতে ৪৯টি দেশে বিষাক্ত DDT-এর ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং ২৩টি দেশে সীমাবদ্ধ পরিসীমায় DDT ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশেও DDT-এর ব্যবহার নিষিদ্ধ কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটির যথেচ্ছ ব্যবহার এখনও বিদ্যমান রয়েছে, বিশেষ করে শুঁটকি শিল্পে।

ক্ষতিকারক রঙ ব্যবহার:

বাংলাদেশে শিল্প রঞ্জক যেমন টেক্সটাইল শিল্পে ব্যবহৃত রঙ খাদ্যে ব্যবহৃত হয় যেমন মিষ্টি বিপণিতে মিষ্টির রঙ উজ্জ্বল করতে কৃত্রিম রঙ ব্যবহার করা হয়।


উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের মানুষ মিষ্টি খেতে ভালোবাসে এবং বিভিন্ন উৎসবে মিষ্টি একটি অপরিহার্য উপাদান। এছাড়াও বেগুনি, পেঁয়াজু প্রভৃতি ইফতারসামগ্রীতে কৃত্রিম রঙ ব্যবহার করা হয়।

খাদ্যে অন্যান্য ভেজালসমূহ:

উপরোল্লিখিত বিষয় ছাড়াও নিত্যনৈমিত্তিক অন্যান্য খাদ্যে ভেজাল প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে-


মুড়িতে ইউরিয়া মেশানো যা মুড়িকে সাদা ও বড় আকারের করে। ইউরিয়া মানব স্বাস্থ্যের জন্য সাম্প্রতিককালে একটি চিকিৎসা জরিপে দেখা যায় যে, মুড়িতে ক্যাডমিয়ামের পরিমাণ সাধারণত চালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ, যা ইউরিয়া ব্যবহারের কারণে বলে প্রতীয়মান হয়।



উবে আইসক্রিম হল একটি ফিলিপিনো আইসক্রিম স্বাদ যা উবে (বেগুনি ইয়াম বা মেটে আলু) প্রধান উপাদান রং হিসাবে ব্যবহার করে তৈরি করা হয়।

আইসক্রিম : বাংলাদেশীদের খাদ্য তালিকায় বিশেষ করে শিশুদের জন্য একটি অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান যা খাঁটি দুধ থেকে তৈরি করা হয়।

কিন্তু বর্তমানে নানাভাবে ভেজালপূর্ণ যা আলুর পেস্ট, পামতেল, সয়াবিন তেল, পশু বা উদ্ভিজ্জ চর্বি প্রভৃতির সাথে কৃত্রিম ফ্লেভার মিশায়ে তৈরি করা হয়।



🍯খাদ্য সংযোজন বা
⁉️👉ফুড এডিটিভ কী🍄👍


সাবস্ক্রাইব করুন। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রশ্ন, উত্তর বা উপদেশ পেতে শুধু হোয়াটস্যাপ +৮৮০১৮১৩৬৮০৮৮৬ এ মেসেজ দিন।

সূত্র, 1-https://www.today.com/health/caramel-coloring-pepsi-it-safe-6c10533512
https://thesciencenotes.com/food-additives/

মন্তব্যসমূহ