দেশীয় মেডিক্যাল এপস 📳
সেরা দেশীয় মেডিক্যাল এপসগুলো
কেন এবং কারা অনুসন্ধান করেন
ঢাকা বিভাগে পরিচালিত ‘পজিটিভ পারসেপশন অব সেলফ মেডিকেশন প্র্যাকটিস অ্যান্ড সাইবারকন্ড্রিয়া বিহেভিয়ার অ্যামং অ্যাডাল্টস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণায় ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী ৪৮০ জন অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে ৯৬ শতাংশই অবিবাহিত।
গবেষণায় দেখা যায়, লোকজন উপসর্গ দেখে রোগনির্ণয় ও ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ পেতে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। শিক্ষিতদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি। আবার নারীদের চেয়ে পুরুষদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি।
বিএমসি পাবলিক হেলথ (২০১৫) সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, যাঁরা অসুস্থতা ও স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত তথ্যের জন্য ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করেন, তাঁরা মূলত তরুণ, নারী ও উচ্চশিক্ষিত।
মেডিকেল এপ্স এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
গবেষণায় দেখা গেছে, এক-তৃতীয়াংশ (২৯.৮১%) উত্তরদাতা জানিয়েছেন, ইন্টারনেটে স্বাস্থ্যগত তথ্য অনুসন্ধানের পর তাঁরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। কম বয়সী উত্তরদাতারা ইন্টারনেট অনুসন্ধানের পর বেশি উদ্বিগ্ন ছিলেন।
আবার গুগল অনুসন্ধানের পর এক-দশমাংশের বেশি উত্তরদাতা (১২.৩৮%) অনুভব করেছিলেন, তাঁদের উপসর্গ আরও বাজে রূপ নিয়েছে।
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা: গুগলে উপসর্গ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে সব সময় স্বাস্থ্যগত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বৃদ্ধির ঝুঁকি থাকে। যেমন মাথাব্যথার উপসর্গ অনুসন্ধানে মস্তিষ্কের টিউমারের ফলাফল আসতে পারে।
এতে ব্যক্তির মধ্যে উদ্বেগ বাড়তে পারে। এই উদ্বেগ ব্যক্তির মধ্যে স্নায়বিক রোগের জন্ম দিতে পারে। আবার মানসিক চাপের কারণে ব্যক্তির কিছু উপসর্গ আরও খারাপ হতে পারে।
ছোট সমস্যা, বড় সমস্যা: কেউ গুরুতর কোনো উপসর্গ নিয়ে অনুসন্ধান করলে তাকে ছোট সমস্যা হিসেবে দেখাতে পারে গুগল।
এতে কেউ কেউ তাঁর স্বাস্থ্যগত অবস্থাকে না–ও গুরুত্ব দিতে পারেন। তবে বাস্তবে হয়তো সমস্যাটি বেশ গুরুতর, যা পরে বড় বিপদের কারণ হতে পারে। আবার গুগলের ফলাফল দেখে ব্যক্তি কখনো কখনো তাঁর সামান্য সমস্যাকে অনেক বড় বলে মনে করতে পারেন।
ভুল রোগ নির্ণয়: অনলাইনে উপসর্গ অনুসন্ধানে ভুল রোগনির্ণয়ের আশঙ্কা বেশি থাকে। ওয়েস্টার্ন জার্নাল অব ইমার্জেন্সি মেডিসিন সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগে রোগীর গুগল অনুসন্ধানের ফল আর চিকিৎসক-ডায়াগনস্টিকের রোগনির্ণয়ের ফলের মধ্যে খুব কমই সংগতি থাকে।
ভুল ওষুধ গ্রহণ: অনলাইনে নিজে নিজে রোগ নির্ণয় করে ব্যক্তি ভুল সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেন। এ অবস্থায় গুগলের পরামর্শে অনেকে ভুল ওষুধ গ্রহণ করেন।
এতে পরিস্থিতি মারাত্মক হতে পারে। বিবিসি ও গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সালে যুক্তরাজ্যে এলোইস অ্যামি প্যারি (২১) নামের এক শিক্ষার্থীর অকালমৃত্যু হয়।
তিনি নিজে নিজে অনলাইন থেকে পরামর্শ নিয়ে ওজন কমানোর আটটি ট্যাবলেট খেয়েছিলেন। এই ট্যাবলেটে শিল্পে ব্যবহৃত বিষাক্ত রাসায়নিক ছিল।
গুরুতর রোগের ঝুঁকি: সম্ভাব্য হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, খিঁচুনি বা টিউমারের মতো গুরুতর রোগ গুগল শনাক্ত করতে ব্যর্থ হলে তার পরিণতি রোগীর জন্য মারাত্মক হতে পারে।
চিকিৎসা সহায়তায় বাধা: গুগলে রোগনির্ণয়ের অন্যতম একটি সমস্যা হচ্ছে, এটি ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দিতে পারে।
গুগলে অনুসন্ধান করে সমস্যা গুরুতর নয় দেখা গেলে ব্যক্তি আর চিকিৎসকের কাছে না–ও যেতে পারেন। অথচ তাঁর হয়তো চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার ছিল।
চিকিৎসককে অবিশ্বাস: রোগীর গুগলে উপসর্গ অনুসন্ধানের নেতিবাচক প্রভাব চিকিৎসককেও মোকাবিলা করতে হয়। অনেকে উপসর্গ গুগলে অনুসন্ধানের পর চিকিৎসকের কাছে যান।
এ ধরনের রোগীকে সামাল দিতে চিকিৎসককে বেশ বেগ পেতে হয়। গুগলের ফলাফলের সঙ্গে চিকিৎসকের কথার মিল না হলে চিকিৎসককে অবিশ্বাস করতে পারেন রোগী। তখন রোগীর মনে হতে পারে, চিকিৎসক ভুল বলছেন।
বাড়তি খরচ: গুগলে অনুসন্ধান করে অনেকে গুরুতর কিছু দেখে চিকিৎসকের কাছে ছুটতে পারেন। নানা অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারেন। পরে দেখা গেল, তেমন কিছুই হয়নি।
আবার সমস্যা ছোট দেখে অনেকে রোগকে অবজ্ঞা করতে পারেন। পরে রোগ গুরুতর আকার ধারণ করলে এই অবহেলার খেসারত দিতে হয়। তখন চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ হতে পারে।
১, DIMS
এই অ্যাপ সম্পর্কে মূল বৈশিষ্ট্য এবং সুবিধাগুলো হল:
১. ওষুধের বিশদ বিবরণ
(কোন রোগের জন্য , ডোজ এবং প্রয়োগ , পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, মিথসক্রিয়া এবং সতর্কতা, FDA গর্ভাবস্থার বিভাগ, থেরাপিউটিক ক্লাস, প্যাকের আকার এবং দাম)।
২. ওষুধ অনুসন্ধান(ব্র্যান্ডের নাম, জেনেরিক নাম বা শর্ত দ্বারা অনুসন্ধান করুন)।
৩. ব্র্যান্ডের ওষুধ (A-Z ব্র্যান্ড)।
এটি ডাক্তারদের জন্য একটি খুব সহায়ক অ্যাপ। ড্রাগের সমস্ত ট্রেড নাম মনে রাখা একটি কঠিন কাজ। এই অ্যাপটি সেই কাজটিকে সহজ করে দিয়েছে। এখন আমরা সহজেই ট্রেড নাম খুঁজে পেতে পারি যদি আমরা জেনেরিক নাম জানি।
এটি এমনকি ডোজ, পথ,, গর্ভাবস্থার শ্রেণীতে আমাদের সাহায্য করে এবং এতে ডাক্তারদের জন্য সহায়ক আরও অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আমি অ্যাপটিতে আরও কিছু সুবিধাজনক বৈশিষ্ট্য যোগ করার পরামর্শ দিচ্ছি যেমন অ্যাপটিতে EDD গণনা করা, ওজন অনুযায়ী তরল গণনা ইত্যাদি যা ইন্টার্ন এবং ক্লিনিকাল ডাক্তারদের সাহায্য করবে।
২, মেডিসিন ডিরেক্টরি বাংলাদেশ
মাইক্রোসফ্ট এর মেডিক্যাল শিক্ষা বিভাগের এপস এটি।
মেডিসিন ডিরেক্টরি বাংলাদেশ, বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ঔষধ অভিধান। ৮০০০০+ নাম এবং উত্স থেকে আপনার ওষুধ অনুসন্ধান করুন, আপনার প্রয়োজনীয়গুলি পছন্দের তালিকায় রাখুন। একটি নামের জন্য সম্পর্কিত এবং অনুরূপ ওষুধ খুঁজুন।
NerdCats
এটি সংক্ষিপ্ত রাখতে, আপনার নিজস্ব ওষুধগুলি আপনার পকেটে রাখুন। মেডিসিন ডিরেক্টরি বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ঔষধ অভিধান।
৩,PDM: Diagnosis & Management
এই অ্যাপ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল, ব্যবহারিক রোগ নির্ণয় এবং ব্যবস্থাপনা (PDM)
মনোযোগ: এই অ্যাপটি শুধুমাত্র "নিবন্ধিত ডাক্তারদের" দ্বারা ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে। আপনি যদি নিবন্ধিত ডাক্তার না হন তবে এটি ইনস্টল করবেন না।
প্রাকটিক্যাল ডায়াগনসিস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (পিডিএম) হল একটি ব্যবহারিক, পয়েন্ট-অফ-কেয়ার মোবাইল অ্যাপ যা সাধারণ অনুশীলন এবং হাসপাতালের সেটিংস উভয় ক্ষেত্রেই দেখা সবচেয়ে সাধারণ চিকিৎসা ব্যাধিগুলির নির্ণয় এবং চিকিত্সা সম্পর্কিত ক্লিনিকাল তথ্য সরবরাহ করে।
৪, স্কয়ার মেডিসিন গাইড
যে কোন রোগের ঔষধ জানা খুবই জরুরী। আমাদের আশেপাশে অনেকেরই এই গুন টি আছে, যে কোন রোগের ঔষধ মুখস্থ করতে পারে।
আবার কারো কারো রোগের নাম, রোগের লক্ষণ, রোগের চিকিৎসা নিয়ে চিকিৎসককে দেখাতে হবে, সেখানেই রোগের ভালো চিকিৎসা হবে।
এজন্য স্কয়ার মেডিসিন গাইড নামে একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে। যাতে সবাই অ্যাপটি দেখে যেকোনো রোগের ওষুধ জানতে পারে।
৫, কোন রোগের নিরাময় কী
প্রয়োজনীয় ঔষধ নির্দেশিকা সব মানুষের জন্য উপলব্ধ করা উচিত. "কোন রোগের নিরাময় কী" অ্যাপটি সেই গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে। অ্যালোপ্যাথির ওষুধের ওপর ভরসা রেখে অনেকেই এই অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিলে অবশ্যই উপকৃত হবেন।
ডাক্তার, প্যারামেডিকস, ফার্মাসিস্টরা কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই এ বিষয়ে অনেক জ্ঞান অর্জন করেছেন। দেখা যায়, এই মানুষগুলো বিভিন্ন বইয়ের মাধ্যমে এই সাধারণ জ্ঞান অর্জন করেছেন, বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং কোন রোগের ওষুধ কী, এই অ্যাপের মাধ্যমে বিপদের সময় বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে ভালো পরামর্শ পাওয়া যায়।
সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করলে কোনো রোগ হবে না। তাই আমাদের একটি রুটিন জীবন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম ও খাদ্যাভ্যাসের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।
শরীরে অতিরিক্ত মেদ থাকলে তা কমাতে হবে। তাই আমাদের সকল রোগের চিকিৎসা খুব সাবধানে করতে হবে এবং ওষুধের নির্দেশিকা খুব সাবধানে মেনে চলতে হবে ইত্যাদি নিয়ে তৈরী।
স্বাস্থ্যের কথা/ বাংলাভাষায় অনলাইন স্বাস্থ্য ম্যাগাজিন
সূত্র, ওয়েব এমডি,
"https://www.prothomalo.com/bangladesh/xpccrjhzvg>
মন্তব্যসমূহ