বাড়তি মেদ জমার সাথে বিপাকের কি সম্পর্ক?

বাড়তি মেদ জমার সাথে বিপাকের কি সম্পর্ক?

বাড়তি মেদ জমার সাথে বিপাকের কি সম্পর্ক?


মেটাবলিজমের মাত্রা যত কম হয় ওজন ততটাই বৃদ্ধি পায়।

বয়স বাড়ার সঙ্গে অকারণে ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণটি হলো, বয়স বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে মেটাবলিজমের হার কমে যেতে থাকে প্রাকৃতিকভাবেই। আপনি চাইলে এটা উল্টাতে পারেন হাল্কা ব্যায়াম দ্বারা।


কারো বিপাক বা মেটাবোলিজম দ্রুত কিংবা মন্থর , সেটা মেদ জমার সাথে সম্পর্ক হীন।


সাধারণত শরীরের বিপাক হার বাড়লে মেদ কমে। এই সূত্রটিকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত মেদ কমাতে অনেকেই বিপাক হার অস্বাভাবিক হারে বাড়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু এই বিপাকীয় হার বা বিএমআর বাড়ানো নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা ভুল ধারণা রয়েছে।


অনেক কোম্পানি গ্রীন টি, কফি ইত্যাদির বিজ্ঞাপন দেন, যা মেটাবলিজম বাড়িয়ে শরীরের মেদ কমায়।


অনেকেই মনে করেন মেদ কমাতে বেশি বেশি গ্রিন টি খাওয়া উচিত। কিন্তু আসল কথা হলো গ্রিন টির কারণে বিপাক হার বাড়লেও বেশি বেশি গ্রিন টির কারণে যে বিপাক হার বেড়ে মেদ কমাবে এমনটা নয়। তাই দিনে দুই বারের বেশি গ্রিন টি খাওয়ার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।


আরেকটি ভুল ধারণা হলো কার্ডিও এক্সারসাইজের সঙ্গে বিপাক হারের অনেক বেশি সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু মূল বিষয় হলো এই দুটি বিষয়ের তেমন কোনো সম্পর্ক নেই।


কার্ডিও এক্সারসাইজ যেমন দৌড়ানো, সাঁতার, জগিং, সাইক্লিং এ সব নিয়মিত অভ্যাসে ওজন কমে ঠিকই। কিন্তু এর সঙ্গে বিপাক হার বাড়ানোর-কমানোর কোনো সম্পর্ক নেই।


ক্যালোরি পোড়াতে যেটুকু ভূমিকা এর রয়েছে, তার প্রভাবেই ঝরে মেদ। বিপাক হার বাড়াতে পারে ভেবে বাড়াবাড়ি রকমের কার্ডিও এক্সারসাইজ করলে শরীর ক্লান্ত হবে ও অন্যান্য জটিলতাও দেখা দেবে।


এজন্যই অনেক সময় দেখা যায়, নিয়ম মেনে ডায়েট, ব্যায়ামের পরেও অনেক ক্ষেত্রে সে ভাবে ওজন কমে না।


আরেকটি ভুল ধারণা হলো কম খেলেই বিপাক হার বাড়বে। ওজন কমানোর প্রশ্ন হোক বা বিপাক হার বাড়ানো, কম খাওয়া কোনোভাবেই বিজ্ঞানসম্মত নয়। বরং কম খেয়ে ওজন কমানোর মতো অবৈজ্ঞানিক কিছুই হয় না।


তিন ঘণ্টা অন্তর একটু একটু করে খেতে হবে। কম খেলে শারীরিক ক্লান্তি, গ্যাসট্রাইটিসের সমস্যা যেমন আসবে তেমনই খালি পেট মেদের পরিমাণও বাড়িয়ে দেবে।



নারী-পুরুষের বিপাক হার

গর্ভাবস্থায়, মহিলারা বেশি পরিমাণে চর্বি সঞ্চয় করে যা শুধুমাত্র বর্ধিত শক্তি গ্রহণের জন্য দায়ী করা যায় না। এই পর্যবেক্ষণগুলি পরামর্শ দেয় যে ক্যালোরি খাওয়া এবং ব্যবহৃত ক্যালোরির মধ্যে সম্পর্ক পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে আলাদা। শক্তি বিপাকের এই লিঙ্গ পার্থক্যের কারণ জানা যায়নি;

নারী-পুরুষের বিপাক হার কী আলাদা


পুরুষ এবং মহিলাদের বিপাকীয় হারের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।

যাইহোক, ব্যক্তিদের বিপাকীয় হার তাদের বয়স এবং আকারের জন্য গড় বিপাক হারের তুলনায় ২৫% ধীর বা ২৫% দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে।


এই ধারণাও অত্যন্ত ভুল। সম ওজনের নারী ও পুরুষের বিপাক হার মোটেও এক হবে না। পুরুষের বিপাক বেশি বলে একই খাবার সমপরিমাণ খেলে নারীর মেদ জমবে পুরুষের চেয়ে বেশি।


মেটাবলিজম কমানোর উপায় কি?

মেটাবলিজম কমানোর কোন উপায় নেই, কারণ দেহের ধরণ অনুযায়ী মেটাবলিজম হার হয়ে থাকে। তবে মেদ-চর্বি না জমলেও ওজন বাড়ানো সম্ভব, চর্বি কিংবা মাসেল মাস বাড়ানোর মাধ্যমে।


মোটা হতে গেলে প্রথমেই এই মেটাবলিজম হার কমাতে হবে। তাতে আপনি যে খাবারটা খাবেন, সেটা বাড়তি ওজন রূপে আপনার শরীরে জমার সুযোগ পাবে।


মেটাবলিজম হার কম রাখার জন্য প্রতিবেলা খাবারের পর লম্বা সময় বিশ্রাম করুন। খাবার পর কমপক্ষে ১ ঘণ্টা কোনও কাজ করবেন না।



বিপাক বৃদ্ধির প্রতিকার

মেটাবলিজম বৃদ্ধির উপায় কি? দিন তাড়াতাড়ি শুরু করুন। একটি স্বাস্থ্যকর দিন শুরু করার জন্য রাতে ঘুম ভালো হওয়া জরুরি যা বাড়ায় মেটাবোলিজম।


উপরের শক্তিক্ষয় অংশটি দেখুন, রেস্টিং bmr বা বিশ্রামকালীন শক্তিক্ষয় ৫০% এবং শারীরিক কাজের জন্য শক্তিক্ষয় ২০% প্রায়।

ফ্যাটি কোষের চেয়ে মাসল কোষের বেশি ATP বা শক্তির প্রয়োজন হয়। তাই যার মাসল বেশি তার বিপাক ক্রিয়াও দ্রুত।


বয়স বাড়ার সাথে মাসল কমে যায়, তাই তার বিপাক ক্রিয়া ও মন্থর হয়ে পড়ে।

কেউ যদি মেদ জমা কমাতে চায় তবে ঘন ঘন এমন খাবার গ্রহণ করতে হবে যার ক্যালরি কম এবং সাথে শারীরিক কাজ বাড়াতে হবে।


কম ক্যালরির খাবার বিশ্রামকালীন মেটাবলিজম কে শক্তির জন্য ফ্যাট সেলের উপর নির্ভর করাবে ও ফ্যাট বার্ন করতে সাহায্য করবে।


সাথে কায়িক পরিশ্রম আরো কিছু ফ্যাট বার্ন করাবে।

এভাবে দুয়ের সমন্বয়ে পাবেন কাঙ্খিত মেদহীন সুস্বাস্থ্য।


বিএমআই সংক্রান্ত
প্রশ্নোত্তর গুলো কি⁉️▶️


"স্বাস্থ্যের কথা " বাংলা ভাষায় অনলাইন স্বাস্থ্য ম্যাগাজিন অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। বিশেষজ্ঞ মানবিক চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত। নিম্নোক্ত নম্বরে বিকাশ এর মাধ্যমে দান করে সহায়তা করুন; +৮৮০১৮১৩৬৮০৮৮৬, আপনার দান দরিদ্রদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে।

মন্তব্যসমূহ