গুরুত্বপুর্ন সুপারফুড সমূহ খাওয়ার নিয়ম কি

সুপারফুড খাওয়ার নিয়ম

সুপারফুড হল খাবারের জন্য একটি বিপণন বা বাণিজ্যিক শব্দ যা একটি ব্যতিক্রমী পুষ্টির ঘনত্বের খাবার যার ফলে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুবিধা পাওয়া সম্ভব।


একটি খাবার কে সুপারফুড (যেমন স্যামন, ব্রকলি, বা ব্লুবেরিকে) হিসাবে তখনই সংজ্ঞায়িত করা হয় যা দেখতে ক্ষুদ্র হলেও সমৃদ্ধ (যেমন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার বা ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড) যা একজন ব্যক্তির স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে বিবেচিত হয় যা ইতিপূর্বে আলোচিত হয়েছে।


সুপারফুড কি ‼️
এর গুরুত্ব ও বিশুদ্ধতা কী⁉️▶️


এখানে গুরুত্বপুর্ন কিছু আলোচিত সুপারফুড খাওয়ার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করেছি।


চিয়া সিড


চিয়া, সরিষার বীজ অত্যন্ত কার্যকরী এক্সফোলিয়েটর হিসেবে কাজ করে।

অন্য যেকোনো স্ক্রাবের মতো, চিয়া ও সরিষার বীজ ত্বক থেকে সমস্ত অতিরিক্ত তেল দূর করে এবং আপনার ত্বককে তার সতেজতা ফিরিয়ে আনে।


চিয়া সিডস মুলত মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোর মরুভূমি অঞ্চলে বেশি জন্মায়। প্রাচীন অ্যাজটেক জাতির খাদ্য তালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত ছিল।


এগুলো দেখতে অনেকটা তকমা দানার মতো। চিয়া বীজের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে,

  • আয়রন,
  • ফোলেট,
  • ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ।
  • এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার প্রোটিন। প্রতি ২৮ গ্রাম পরিমান চিয়া সিডে প্রায় ৪ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।
  • এ বীজের ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম হাড় ও দাঁত উন্নত করে,
  • ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ট্রাইগ্লিসারাইডস চর্বি কমিয়ে হৃদপিণ্ডকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে। রক্তের এই খারাপ চর্বি হৃদরোগ সৃষ্টি করতে পারে।
  • এ বীজের দ্রবণীয় ফাইবার কোলেস্টেরল কমাতে ভূমিকা রাখে, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে এবং অনেকক্ষণ ধরে পেট ভরা রাখে।

চিয়া সিড খাবার নিয়ম:


নরম বা তরল খাবার, দই, খাদ্যশস্য, সালাদ এবং কোমল পিঠার সঙ্গে চিয়া বীজ খেতে পারেন।

বাজার থেকে সতেজ চিয়া বীজ কিনুন, প্রক্রিয়াজাত বীজ খাবেন না। অনলাইনে এটি পাওয়ার কিছু লিংক দেয়া হলো,


সূর্যমুখী বীজ



তিন ধরনের সাধারণত ব্যবহৃত সূর্যমুখী বীজ রয়েছে: লিনোলিক (সবচেয়ে সাধারণ), উচ্চ ওলিক এবং সূর্যমুখী তেলের বীজ। প্রতিটি জাতের নিজস্ব অনন্য মাত্রা রয়েছে মনোস্যাচুরেটেড, স্যাচুরেটেড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট।


গুণের তুলনায় কম গুরুত্ব পাওয়া সূর্যমুখী বীজ ভিটামিন বি এবং ভিটামিন ই এর উৎকৃষ্ট উৎস। এ বীজে থাকা ফোলেট গর্ভস্থ শিশুদের জন্মত্রুটি প্রতিরোধ করে।


এ বীজের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন ই কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে, চুল ও ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখে এবং ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করতে পারে। এ বীজ প্রোটিন ও হার্ট-হেলদি ফ্যাটে সমৃদ্ধ।



সূর্যমুখীর বীজ ছোট এবং বাদামের স্বাদের, মানে আপনি সহজেই আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

এগুলিকে দই, বার্গার, মুইসলি দিয়ে নাড়ুন বা আপনার ভাজা ভাজা, স্মুদি এবং সালাদে ছিটিয়ে দিন।

  • এন্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে।
  • সূর্যমুখীর বিচিতে রয়েছে উন্নতমানের ভিটামিন ‘ই’ যা এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে ও শরীরের বিভিন্ন অংশের জ্বালাপোড়া কমায়।
  • নিয়মিত এটি খেলে অস্টিওআর্থারাইটিস, অ্যাজমা ও বাতরোগ নিরাময় হয়।
  • হাড় শক্তিশালী করে। হাড়ের সুস্থতার জন্য ম্যাগনেশিয়াম ও ক্যালশিয়াম দুটোই খুব জরুরি যা এই বীজে পর্যাপ্ত আছে।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধক। এই বীজে আছে উচ্চমানের ফাইটোস্টেরল ও লিগন্যানস যা ক্যান্সার প্রতিরোধক।

সূর্যমুখীর বীজ খাবার নিয়ম:



একমুঠো সূর্যমুখী বীজ চিবাতে পারেন অথবা মিষ্টি রুটি বা বিস্কুট, সালাদ, নরম খাবার এবং ছোট ছোট খন্ডের ভাজা খাবারের সঙ্গে যুক্ত করে খেতে পারেন। লবণাক্ত সংস্করণ পরিহার করুন, কারণ এতে উচ্চমাত্রার সোডিয়াম থাকে।


গম বীজ



অঙ্কুরিত গম বা অঙ্কুরিত গম, গমের স্প্রাউট হল একটি ভেজা এবং অপেক্ষাকৃত উষ্ণ পরিবেশে গমের বীজ অঙ্কুরিত করার একটি পণ্য যা অঙ্কুরিত হয়।


এটি কখনও কখনও বিয়ার তৈরির জন্য মল্ট আকারে বার্লির পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়। এটি অসংখ্য ফার্সি পেস্ট্রি, খাবার এবং ডেজার্টে ব্যবহৃত হয়।


  • গমশস্যের পুষ্টিকর শক্তিঘর হল গমবীজ- যা প্রোটিন, আয়রন এবং ভিটামিন বি বা ফোলেটে ভরা থাকে।
  • এ বীজের উচ্চ ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • এ বীজে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে যার ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ হুট করে বাড়তে পারে না।

গম বীজ খাবার নিয়ম:



স্মুদি বা তরল খাবার, হট সিরিয়াল ও বেকিং খাবারের সঙ্গে যুক্ত করে গম বীজ খেতে পারেন। রান্না করেও গম খাওয়া যায়। গম বীজের স্বাস্থ্যকর পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট দ্রুত বিস্বাদ হয়ে যাতে পারে, তাই সর্বোচ্চ সতেজতা বজায় রাখতে পাত্রে ভরে টাইট করে মুখ বন্ধ করে ফ্রিজারে রাখুন।

তিসি বীজ


বেশিরভাগ গবেষণায় স্থির করা হয়েছে যে তিসি ও তিলের বীজ খাওয়া নিরাপদ এবং এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব নেই।

অত্যধিক তিল বীজ নীচে বর্ণিত কিছু প্রতিকূল প্রভাব হতে পারে। যদি তিল বীজ সীমার মধ্যে খাওয়া না হয়, তাহলে তাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম হতে পারে।


  • বাদামি রঙের এবং বাদামের স্বাদযুক্ত তিসি বীজ দ্রবণশীল ফাইবারের বড় উৎস।
  • দ্রবণশীল ফাইবার কোলেস্টেরল কমায়, দীর্ঘসময় পেট ভরা রাখে এবং ব্লাড সুগার বা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে।
  • এ বীজে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডি থাকে, যা চোখ ও মস্তিষ্কের উপকার সাধন করে এবং ট্রাইগ্লিসারাইডস কমাতে সহায়তা করে।
  • এতে লিগন্যান নামে একপ্রকার ইস্ট্রোজেন থাকে যা নির্দিষ্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে।

তিসি বীজ খাবার নিয়ম:


তিসি বীজ শক্ত। তাই প্রথমে ব্লেন্ডার বা কফি ব্লেন্ডারে তিসি বীজ চূর্ণ করুন।

অন্যথায় বীজ হজম না হয়ে বাইরে চলে আসতে পারে। এর ফলে প্রয়োজনীয় ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শোষণ হবে না। চূর্ণিত তিসি বীজ নরম খাবার, তরল খাবার বা পানীয় খাবার, দই, ওটমিল বা জই, খাদ্যশস্য, ক্যাসারোল এবং বেকিং খাবারে যুক্ত করে খেতে পারেন। চূর্ণিত তিসি বীজ বায়ুরোধী পাত্রে ভরে রেফ্রিজারেটরে রাখুন।


কুমড়া বীজ



কুমড়োর বীজ স্বাস্থ্যকর চর্বি, ম্যাগনেসিয়াম এবং অন্যান্য পুষ্টির একটি উপযুক্ত উৎস যা হার্ট এবং হাড়ের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে। এগুলি পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন সেলেনিয়াম এবং বিটা ক্যারোটিনে সমৃদ্ধ। উপরন্তু, তারা লোহার একটি উচ্চ উৎস।

  • ভিটামিন বি,
  • আয়রন,
  • ম্যাগনেশিয়াম,
  • জিঙ্ক,
  • প্রোটিন এবং ট্রিপটোফেন অ্যামিনো অ্যাসিডের ভালো উৎস।
  • ট্রিপটোফেন অ্যাঙ্কজাইটি বা মানসিক উদ্বেগ হ্রাসে অবদান রাখে।
  • এ বীজে উচ্চমাত্রার প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিডও থাকে, যা ব্লাড ভেসেলকে সুস্থ রাখে এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে ফেলে।
  • কুমড়া বীজ পেপিটাস নামেও পরিচিত।

কুমড়া বীজ খাবার নিয়ম:

কুমড়া বীজ ভেজে তাতে কামড় বসাতে পারেন। গ্র্যানোলা বার এবং ট্রেইল মিক্স রেসিপিতে এ বীজ রাখতে পারেন অথবা এ বীজ দিয়ে সুপের ওপর আবরণ সাজাতে পারেন। এ বীজের তেল সালাদের সসের মান বাড়িয়ে তোলে। তবে রান্না করলে এ বীজের পুষ্টিগুণ কিছুটা কমে যায়।


শণ বীজ



এই বীজ তেল, দুধ এবং প্রোটিন পাউডার আকারেও ব্যবহার করা যেতে পারে। গাঁজা এবং শন গাছ একই রকম হলেও, শণ কিছুট আলাদা বলে দাবি করেন অনেক বিশেষজ্ঞ।


  • শণ বীজকে নিরামিষ প্রোটিনের একটি আর্দশ উৎস বলা চলে। এতে ৩০ শতাংশ এর ও বেশি প্রোটিন আছে।
  • সম্পূর্ণ প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডের বড় উৎস হচ্ছে এ বীজ।
  • এ বীজে উদ্ভিদজাত উপাদান ফাইটোস্টেরলস থাকে, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
  • উল্লেখ্য, শণ বীজ এবং মারিজুয়ানা উভয়েই ক্যানাবিস (মাদকবিশেষ) জাতের হলেও শণের মধ্যে মারিজুয়ানার মতো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টিকারী উপাদান টিএইচসি নেই। মারিজুয়ানা সেবনে যে প্রতিক্রিয়া হয় শণ বীজে তা পাবেন না।
  • এগুলো আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় অ্যামিনো এসিড তৈরি করে যা আমাদের শরীর নিজে থেকে তৈরি করতে পারে না।

শণ বীজ খাবার নিয়ম:

সালাদ, তরল খাবার বা পানীয়, খাদ্যশস্য অথবা দইয়ে মিশিয়ে বা ছিটিয়ে শণ বীজ খেতে পারেন। বেকড খাবারের পৃষ্ঠেও এ বীজ ব্যবহার করা যায়।


ওষুধ দিয়ে বাড়িতে চিকিত্সা করতে পারেন।
  • দূষিত খাবার বা পানীয়-জলের মাধ্যমে বা হাত না ধোয়ার ফলে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে রোগটি ছড়িয়ে পড়ে।
  • পাচনতন্ত্রের ব্যাধির জন্য দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া হতে পারে।
  • যদি একজন ব্যক্তির ঘন ঘন মল যায় কিন্তু সেগুলি স্বাভাবিক সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তবে এটি ডায়রিয়া নয়।


  • অসংক্রামক রোগগুলো কী ⁉️
    কেন হয়⁉️👉



    "স্বাস্থ্যের কথা " বাংলা ভাষায় অনলাইন স্বাস্থ্য ম্যাগাজিন অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। বিশেষজ্ঞ মানবিক চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত। নিম্নোক্ত নম্বরে বিকাশ এর মাধ্যমে দান করে সহায়তা করুন; +৮৮০১৮১৩৬৮০৮৮৬, আপনার দান দরিদ্রদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে।

    মন্তব্যসমূহ